Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 1:28 pm

ভালো কথা বললেও আপনারা অন্যভাবে নেন

প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে হবেÑএমন বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এটা বিতর্কের কোনো বিষয় নয় বলে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দুঃখ হয় এই কারণে, আপনাদের জন্য ভালো কথা বললেও আপনারা অন্যভাবে নেন।’

গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানী থেকে রেলপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছান আইনমন্ত্রী। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, যারা সত্যিকারের এই অপরাধটা করেছে, তাদের ধরার জন্য সব রকমের চেষ্টা করেও যদি সময় লাগে এবং আপেক্ষিকভাবে আমি বলেছি যে যদি ৫০ বছরও সময় লাগে; কিন্তু যারা এই অপরাধ করেছে, খুনটা করেছে, তাদের ধরার জন্য যত সময়ই লাগুক, তাদের আমরা ধরব। আমি এই কথা বলেছি এবং এই কথায় আপনারা মনে করেছেন ৫০ বছর সময় লাগবে।’

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় সঠিকভাবে দোষী নির্ণয়ে তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে হবে।

এ বিষয়ে আজ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। আসল অপরাধীদের ধরা উচিত। আমাদের আইনি কাঠামোতে যেটা বলা হয়, যে অপরাধী নয়, তাকে হয়রানি করা যাবে না। প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে হবে। সেই কারণে আমি এই কথাটা বলেছি। কিন্তু আপনারা গেলেন খেপে। আমি বুঝলাম না, আপনাদের জন্য ভালো কথা বললেও আপনারা খেপেন কেন?’

মামলার তদন্তে ধীরগতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে অনেক মামলা আছে। তিনি এই কারণেই সময়ের কথাটা বলেছেন। সেদিনও যুক্তরাজ্য ৪২ বছর পর একটি খুনের মামলায় আসামিদের ধরতে পেরেছে। কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে ২৪ বছর পর একটি খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, পুলিশ এখানে চেষ্টা করছে। তাদের তদন্ত চলছে। প্রকৃত আসামিদের এখন পর্যন্ত তারা ধরতে পারছে না। সেজন্যই তদন্তে সময় লাগছে। আপনারা কি চান, তদন্তটা বন্ধ হয়ে যাক? এ কারণে আমি কথাটা বলেছি, এই তদন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত অপরাধীকে না ধরা হবে, তত দিন পর্যন্ত চলবে।’

মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন। সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে প্রায় এক যুগ হয়ে গেলেও এখনও এ মামলার বিচারই শুরু করা যায়নি। এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সময় রাজপথে আন্দোলন করেছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো।

মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমার তারিখ এ পর্যন্ত ১০৫ বার পিছিয়েছে। এখনও তদন্ত শেষ করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।