নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাছাই করা ভালো কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত সূচকের বৃদ্ধি ঘটেছে। এতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ব্যাংকের শেয়ার। তবে সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারে গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে প্রধান মূল্যসূচক কমেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে সূচকের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসায় ১০ মিনিটের মধ্যে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। এরপর আবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও পরক্ষণেই পতনের মধ্যে চলে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৫ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে বড় দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু লেনদেনের শেষদিকে একের পর এক ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। এতে প্রধান সূচকের পতনের মাত্রা কমে আসে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী হয় বাছাই করা সূচক। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ৯৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫০ প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে ব্যাংক খাতের ২২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ৮টির দাম কমেছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২২৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৭৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৯৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে বেশি অবদান ছিল লিন্ডে বাংলাদেশের। কোম্পানিটির ১০২ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৫৭ টাকার। ২১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইবনে সিনা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিলÑ এনআরবি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, গ্রামীণফোন, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, জিপিএইচ ইস্পাত এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২০৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৬টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।