ভালো কোম্পানি এসেও কারসাজি শুরু করে

দেশে বড় সমস্যা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া কোনো কিছুর সমাধান হয় না। ছোট-বড় সব সমস্যাই তাকে সমাধা করতে হয়। এটা হওয়া উচিত নয়। যার যার কাজ, নিজ অবস্থান থেকে করে ফেললে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগে না। এতে দেশও এগিয়ে যাবে। গত দেড় মাস ধরে বাজার ভালো অবস্থানে নেই। প্রায় ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর ফেসভেলুর নিচে রয়েছে। আবার ভালো কোম্পানি বাজারে এলে ওই কোম্পানিগুলোও কারসাজি শুরু করে। কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই। তাহলে নিশ্চয়ই বাজারে কোনো কারসাজি হচ্ছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ বাদল এবং ৭১ টেলিভিশনের বিজনেস এডিটর কাজী আজিজুল ইসলাম।
সুলতান মাহমুদ বাদল বলেন, বাজার আসলে স্বাভাবিক অবস্থানে নেই। গত এক বছরে সূচক কমেছে এক হাজার ৭১ পয়েন্ট। যেখানে সূচক ছিল ছয় হাজারের ওপরে। আবার টার্নওভার ৩০০ কোটির টাকার নিচে নেমে এসেছে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে গত দুদিন বাজার বেড়েছে। আসলে দেশ এমন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে যে, শুধু পুঁজিবাজার নয়Ñদেশের যে কোনো খাতে সমস্যা হলেই প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, প্রত্যেকটি খাত পরিচালনার জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বসানো হয়েছে। তেমনি পুঁজিবাজারকে ভালোভাবে পরিচালনার জন্যও দায়িত্বশীলদের বসানো হয়েছে এবং বাজারকে কীভাবে গতিশীল করা যায়, তার নিয়ম-কানুনও রয়েছে। তাহলে ওইসব ব্যক্তিদের কেন ওখানে বসানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাজারে যেখানে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হওয়ার কথা, সেখানে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। আবার কয়েক বছরে আইপিওর মাধ্যমে যেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে, তারা বাজারে আসার জন্য কতটুকু উপযুক্ত। আরও তথ্য রয়েছে, যে কোম্পানি ২০ কোটি টাকা দিয়ে পরিচালনা করা হয়, সেই কোম্পানি বাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে এবং ওই টাকা বিভিন্ন উপায়ে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে ওই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা আস্থাহীনতায় রয়েছেন। এসব কোম্পানিকে কিন্তু অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এরকম যদি হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা কোথায় যাবেন! এরই মধ্যে ১৭টি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ ওইসব ব্যাংক বিনিয়োগযোগ্য, ভালো, নির্ভরযোগ্য ও তাদের প্রতি আস্থা রাখা যায়। ১৭টির মধ্যে ১৬টি ব্যাংকই বিনিয়োগকারীদের জন্য বোনাস ঘোষণা করেছে। কিন্তু ক্যাশ না দিয়ে শুধু বোনাস দিচ্ছে।
কাজী আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের বড় সমস্যা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া কোনো কিছুর সমাধান হয় না। অর্থাৎ ছোট-বড় সব সমস্যাই তাকে সমাধা করতে হয়। আসলে এটি হওয়া উচিত নয়। যার যার কাজ নিজ অবস্থান থেকে করে ফেললে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগে না; ফলে দেশও এগিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় মাস ধরে বাজার ভালো অবস্থানে নেই। প্রায় ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারদর ফেসভেলুর নিচে রয়েছে। আবার ভালো কোম্পানি বাজারে এলে ওই কোম্পানিগুলোও কারসাজি শুরু করে। কিছুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই। তাহলে নিশ্চয়ই বাজারে কোনো কারসাজি হচ্ছে। আবার দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু বাজার বিপরীত অবস্থানে। এ অবস্থা আর কোনো দেশের পুঁজিবাজারে নেই।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০