Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 8:47 pm

ভালো ফলনেও বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর): দেশে কাঁচা মরিচের ঝালে দিশাহারা ক্রেতারা। এমনকি দেশের যেসব জেলায় কাঁচা মরিচের উৎপাদন তুলনামূলকভাবে বেশি হয়, সেখানেও খুচরা বাজারে দাম চড়া। মেহেরপুরের গাংনীতে বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচের দাম সপ্তাহ ব্যাবধানে বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। বাজার মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ভোক্তাদের। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগ বলছে, বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে অভিযান চালানো হবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে। প্রথমে আবহাওয়া অনুকূল না থাকলেও পরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসে। উৎপাদনও ভালো। তথাপি কারণ ছাড়াই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। শুক্রবার বান্দী বাজারে খুচরা কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৪০০ টাকায়। শনিবার গাংনী, রাইপুর ও মড়কা বাজারে মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকায়। রোববার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও আড়তে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।

গাংনীর কাঁচাবাজারের আড়তদার মামুন হোসেন জানান, চাষিরা ক্ষেত থেকে বেশি করে মরিচ না তুলে অল্প মরিচ আড়তে নিয়ে আসছেন এবং কৃত্রিম সংকট দেখানোর কারণে দাম বেশি। চাষিরা বেশি দামের আশায় মরিচ সংকট দেখাচ্ছেন, যার প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের ওপর। একই কথা জানালেন আড়তদার রফিকুল ও আবুল। তারা আরও জানান, অনেক ফড়িয়া রয়েছে, যারা চাষিদের কাছ থেকে গোটা মরিচ ক্ষেত কিনে নেন। পরে সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে আড়তে বিক্রি করেন।

বামন্দী বাজারের খুচরা মরিচ বিক্রেতা সোহেল রানা জানান, আড়তে বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দিন দিন আড়তে মরিচের দাম বাড়ছে। বেশি দাম হওয়ায় অনেকেই কাচা মরিচ কিনছেন না।

মরিচ কিনতে আসা গাংনীর থানাপাড়ার আমেনা ফাটি জানান, গরুর মাংস আর মরিচের দাম একই। ১০ কেজি চালের দামে এক কেজি মরিচ, যা এই কৃষিপ্রধান এলাকায় অকল্পনীয়। কাঁচা মরিচ না কিনে শুকনো মরিচের গুঁড়া কিনলেন তিনি। নওপাড়া গ্রামের আকতার জানান, বাজার এখন কাঁচা মরিচের দখলে।

আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় মরিচের উৎপাদন কমেছে। ফলে দাম একটু বেশি। তবে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দু-এক দিনের মধ্যেই অভিযান চালানোর কথা বললেন মেহেরপুর জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সজল আহমেদ।