প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কৃতী রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও ভাষাসৈনিক মো. জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি স্ত্রী, ছয় ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি জাহেদী ফাউন্ডেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাদ এশা ধানমণ্ডির ঈদগাহ মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা গতকাল ঝিনাইদহের ওয়াজির আলী হাইস্কুল মাঠে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে এ ভাষাসৈনিককের মরহেদ শহরের মহিষাকুণ্ডের বটতলায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ভাষাসৈনিক মুসা মিয়া ১৯৩২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের পাইকপাড়া গ্রামে নানাবাড়িতে জš§গ্রহণ করেন। ব্রিটিশ ভারতে জš§ নেওয়া মুসা মিয়া দেশবিভাগ ও স্বাধীনতার প্রত্যক্ষদর্শী। মওলানা ভাসানীর এ রাজনৈতিক সহচর দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন ঢাকা ও কলকাতায়। জাহিদ হোসেন মুসা অসংখ্য গান ও কবিতা রচনা করেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের নাম ‘অনেক দেরিতে’।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে ভাষাসৈনিক জাহিদ হোসেন মুসার সভাপতিত্বে গড়ে তোলা হয় জাহেদী ফাউন্ডেশন নামে এক সমাজসেবামূলক সংস্থা। বাংলাদেশে নারী, শিশু ও দুস্থদের জন্য খাদ্য কর্মসূচি, শিক্ষা খাতে বৃত্তিমূলক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, স্বাস্থ্য খাতে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ও ক্রীড়া উন্নয়নে এ সংস্থাটি ভূমিকা পালন করে আসছে। তার পৃষ্ঠপোষকতায় যশোর কালেক্টরেট স্কুলে গড়ে ওঠে ‘জাহানারা হুদা একাডেমিক ভবন’। এছাড়া নিজ গ্রাম নারিকেলবাড়িয়ায় আমেনা খাতুন কলেজে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মুসা মিয়া একাডেমিক ভবন’। ঝিনাইদহ শহরে তার নামে গড়ে তোলা হয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের স্কুল ‘মুসা মিয়া বুদ্ধি বিকাশ বিদ্যালয়’। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য হরিণকুণ্ডু উপজেলায় প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘মুসা মিয়া ডায়াবেটিক সেন্টার’।