নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরোধিতা ‘অযৌক্তিক’একথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল ভাসানচরে রওনা হওয়ার পর গতকাল দুপুরে ঢাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ায় সরকার ভাসানচরে অধিকতর সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে। যারা এরই মধ্যে ভাসানচরে গিয়েছে, তারা আনন্দ-উল্লাস-স্বস্তি প্রকাশ করলেও কোনো কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বহুজাতিক গণমাধ্যম রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে জোর করে স্থানান্তরের কথা প্রচার করছে, যা আদৌ সত্য নয়।
তিনি বলেন, যারা স্বেচ্ছায় যেতে চেয়েছেন, শুধু তাদেরই কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এতদিন ধরে শুধু বাংলাদেশের মানবিকতার প্রশংসা করে যাচ্ছেÑআশ্বাসের বাণী শোনানো ছাড়া দৃশ্যমান আর কী হয়েছে? এখনও মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে কার্যকর কোনো চাপ প্রয়োগ করা যায়নি। এই বাস্তবতায় রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরোধিতা করা কতটুকু যৌক্তিক।
পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে তিনি বলেন, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় কয়েকটি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের দেশের প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষ এই দুই উপজেলার বাসিন্দা। কিন্তু এর ওপর আরও ১২ লাখ মানুষ সেখানে স্রোতের মতো এসে আশ্রয় নিয়েছে। এত বড়সংখ্যক জনগোষ্ঠীর ভরণপোষণে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নিঃসন্দেহে চাপ পড়ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ।
সরকার করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহে এরই মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, ‘জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ কিংবা ফেব্রুয়ারিতে টিকা দেশে এসে পৌঁছাবে বলে আমরা আশা করছি। টিকা সংগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে নেয়া হচ্ছে পূর্বপ্রস্তুতি।’ টিকা নিয়ে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা এসেছে, দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি শেখ হাসিনা সরকারের কাছে নিজ অস্তিত্বের মতো। ক্ষমতার জন্য বিএনপিই জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত থাকে, আওয়ামী লীগ নয়।