নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হককে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) ও প্রক্টর বরাবর গতকাল রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ওই নোটিস পাঠান আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান।
গত রোববার ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুলের কক্ষে ঢুকে রড, বাঁশ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় আহত অন্তত ২৪ জনের মধ্যে ৯ জন এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আইনি নোটিসে বলা হয়েছে, নোটিস গ্রহণের সাত দিনের মধ্যে ভিপি নুরুল হকের জীবনের জন্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এতে ব্যত্যয় হলে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।
নোটিসে আরও বলা হয়েছে, নুরুল হকের ওপর এ নিয়ে সাতবারের মতো হামলা চালানো হয়েছে। অতীতের এসব ঘটনায় তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের একদল কর্মীর হাতে মারধরে আহত ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর সুস্থ হয়ে ওঠায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাড়পত্র পাচ্ছেন। হাসপাতালের পরিচালক একেএম নাসির উদ্দিন গতকাল বেলা ১টায় প্রশাসনিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই হামলায় আহতদের শারীরিক অবস্থা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সবাই স্টেবল আছেন। নুরুল হক তার কনুইতে সামান্য ব্যথা অনুভব করায় আমরা এক্স-রে করেছি। আজই তাকে ডিসচার্জ করা হবে। এছাড়া সোহেলকে এইচডিইউতে আনা হয়েছে, তার অবস্থা ভালো। ফারাবীকেও এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। অনেক দর্শনার্থী আসছে, তাই একটু নীরব পরিবেশ প্রয়োজন। এ কারণে ফারাবীকে এইচডিইউতে রাখা হয়েছে।’ এছাড়া আমিনুলের কিডনিতে সামান্য সমস্যা থাকায় তাকে নেফ্রোলজি বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরিচালক নাসির উদ্দিন আরও বলেন, মেহেদী হাসানের ব্লাড প্রেশার সামান্য বেশি আছে, তবে তিনি ভালো আছেন। ফারুকের কানে সামান্য সমস্যা রয়েছে, তবে তিনিও সম্পূর্ণ ভালো আছেন, বৃহস্পতিবার তাকেও ছাড়পত্র দেওয়া হবে। আর নাজমুল ও আরিফ শঙ্কামুক্ত আছেন।
বুধবার হাসপাতাল চত্বরে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের রাশেদ খান অভিযোগ করেছিলেন, আহতদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে লুকোচুরি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক বলেন, ‘আমি আটজনের শারীরিক অবস্থার কথা বলেছি। এখানে কারও শারীরিক অবস্থা নিয়ে লুকোচুরি করা হয়নি। তাদের চিকিৎসার জন্য প্রথমে ১১ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। পরে আরও দুজন বাড়িয়ে মোট ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এত বড় বোর্ড আর কোনো চিকিৎসার ক্ষেত্রে গঠন করা হয়নি।’
এদিকে ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা হত্যাচেষ্টার মামলার তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা ?পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভিপি নুরুল হকের পক্ষ থেকে যে এজাহার দেওয়া হয়েছে, সেটি এসআই রইচ উদ্দিনের করা হত্যাচেষ্টার মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি ডিবি তদন্ত করবে।’