Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 12:48 pm

ভুটানের জন্য আটকে আছে ফ্রি ট্রানজিট: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) মোটরযান চুক্তির আওতায় ভারত ফ্রি ট্রানজিট দিলেও ভুটানের অবকাঠামো দুর্বলতার জন্য তা আটকে আছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওভারসিস করেসপনডেন্ট অব বাংলাদেশ (ওকাব) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশকে ফ্রি ট্রানজিট দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি একটু পরিষ্কার করলে ভালো হয়Ñসাংবাদিকদের এমন কথায় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফর সফল হয়েছে। আর ট্রানজিটের বিষয়ে, ভারত ছাড়াও নেপাল ও ভুটান থেকেও আমাদের দেশে পণ্য আসে। ট্রানজিট নিয়ে আলোচনা হলে তারা বলেছে, এ সুবিধা তারা দেবে। আর ফ্রি ট্রানজিট মানে আমাদের দেশের ওপর দিয়ে সেখানে পণ্য যাবে। এছাড়া ট্রানজিট আমাদের বাড়ানো দরকার।

তিনি বলেন, আমরা তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে বাই এয়ারে পণ্য পাঠাই। অনেক সময় দেখা যায়, টেকনিক্যাল কারণে আমরা সময়মতো পণ্য দিতে পারি না। কার্গো বিমানগুলোকে পণ্য লোড না করেই ফিরে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমরা কলকাতা পোর্ট ব্যবহার করে সেখান থেকে পণ্য পাঠিয়ে থাকি। ভারতের সঙ্গে যখন এ বিষয়ে আলাপ হয়, তখন বলেছি আমাদের এ সুযোগ বাড়ানো দরকার নৌ ও রেলপথে। এক্ষেত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দেন ট্রাকের পরিবর্তে রেলে পণ্য পাঠাও। এতে সড়কে চাপ কম পড়বে। তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সে ধরনের রেল ব্যবস্থা নেই। তাই তোমরা আমাদের এই ব্যবস্থা করে দাও। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার সেক্রেটারিকে ডেকে হিসাব-নিকাশ করতে বলেছেন। তাই বলা যায়, পজিটিভ আলোচনা হয়েছে।

২০১৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী ভারত হয়ে নেপাল, ভুটানের ট্রানজিট বিষয়ে কী হয়েছেÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, বিবিআইএনের আওতায় ভারত সেটা দিতে রাজি। তবে ভুটান এখনও রাজি হচ্ছে না। তারা বলছে আমাদের একটু সময়ের প্রয়োজন, কারণ আমাদের অবকাঠামো সে রকম নয়। আর নেপাল খুবই পজিটিভ। ভুটান আরও বলেছে, তাদের সেখান থেকে পণ্য পরিবহনে ভারত রাজি আছে।

ভারতে ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে দেশে গত বছর আমরা ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। ফলে ৪ বিলিয়ন খুব বেশি নয়, এটা সম্ভব। কেননা, আমরা যখন সার্বিকভাবে ৫১ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম, তখন আমার মন্ত্রণালয় বলেছিল ৪৫-৪৬ বিলিয়ন হবে। কিন্তু ৫১ বিলিয়ন ডলারের বেশি

 হয়েছে। আগামী চার বছরে, প্রতি বছর হাফ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব বলে আমি মনে করি।

অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের ফলে পাটশিল্পের যে ক্ষতি হচ্ছে সে বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলেÑবাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই পাটের ক্ষেত্রে বিষয়টি তুলেছেন। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা খুবই  টেকনিক্যাল, আমি খুব বেশি কিছু জানি না এ ব্যাপারে। তখন দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবকে বসে ঠিক করার কথা বলেন। আমরা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছি। ভারত যেটা করেছে, সেটা আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী করতে পারে না। এটাও ঠিক যে আমরা সরাসরি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারি। তবে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সেভাবে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সচিব পর্যায়ে কিছু আলোচনাও হয়েছে। ওকাবের আহ্বায়ক কাদির কল্লোল, সদস্য-সচিব নজরুল ইসলাম মিঠু এবং সিনিয়র সদস্য ফরিদ হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।