শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ায় গত শুক্রবার সংঘটিত ভূমিকম্প ও সুনামিতে নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর প্রায় সাত ফুট উচ্চতার সুনামির ঘটনা ঘটে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। অবশ্য ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তা তুলে নেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপ শহরটিতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস। সেখানে কম্পনের পর ছোট্ট শহর পালুতে আছড়ে পড়ে প্রলয়ঙ্করী সুনামির ঢেউ। সুউচ্চ ঢেউ লণ্ডভণ্ড করে দেয় উপকূলীয় এলাকা। শুক্রবারের কম্পন ও সুনামির পর শনিবার উপকূলে সন্ধান মিলেছে বহু মরদেহের। ভূমিকম্প-সুনামির ধাক্কায় আহত হয়েছে শত শত মানুষ। আহত বিপুলসংখ্যক মানুষকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেককে খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পালুর আনডাটা হাসপাতালের পরিচালক এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের হাসপাতালে বিদ্যুৎ নেই। রাস্তাগুলো সব বন্ধ হয়ে আছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক কাজ করছে না। যে কোনো ধরনের সহায়তার জন্য আমরা হাত পেতে আছি। আমাদের তাঁবু দরকার, নার্স দরকার, ওষুধ দরকার।’
ভূমিকম্প-সুনামির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি। উপদ্রুত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রম। শুক্রবারের ভূমিকম্প ও সুনামির পর শনিবার সকালেও উপকূলীয় পর্যটন এলাকায় ৯ দশমিক আট ফুট পর্যন্ত উঁচু ঢেউ পরিলক্ষিত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি)-এর মুখপাত্র সুতোপো পুরো নাগ্রহ বলেন, সুনামির ফলে উপকূলে বহু মরদেহের সন্ধান মিলেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে ৪০০ জনের মৃত্যুর কথা জানা গেলেও প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা এখনই বলা যাচ্ছে না। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থান। ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট দেশটির লম্বক দ্বীপে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে ৪৬০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ২০০৪ সালের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের জেরে সুনামি আছড়ে পড়তে অন্তত ১৩টি দেশে। ওই সুনামিতে উপদ্রুত দেশগুলোতে দুই লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়াতেই মৃতের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২০ হাজার।