সোহেল রহমান: ভোলায় অবস্থিত সাড়ে ৩৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাসচালিত একটি ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়িয়েছে সরকার। ‘ভেঞ্চার এনার্জি রিসোর্সেস লিমিটেড’ কর্তৃক পরিচালিত এ ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ এ নিয়ে তৃতীয় দফা বাড়ল। গত বুধবার ‘সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে চুক্তির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্ধিত সময়ের জন্য বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ স্পন্সর কোম্পানিকে প্রায় ২৩৩ কোটি টাকা দেবে সরকার। প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার নির্ধারণ করা হয়েছে তিন টাকা ২১ পয়সা (চার সেন্ট)।
জানা যায়, স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের সর্বশেষ চুক্তির মেয়াদ ২০১৬ সালের ১১ জুলাই শেষ হয়েছে। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও কোনো ধরনের নবায়ন ছাড়াই গত ১৯ মাস ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছিল কোম্পানিটি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ভোলা অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা বিবেচনায় এ ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১২ জুলাই চালু হওয়া এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে তিন বছরের জন্য চুক্তি করেছিল বিদ্যুৎ বিভাগ। পরবর্তী সময়ে ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুই বছর করে এ চুক্তির মেয়াদ চার বছর বাড়ানো হয়। যার মেয়াদ ২০১৬ সালের ১১ জুলাই শেষ হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২০১৬ সালের ২৯ মার্চ সময়সীমা আরও ১০ বছর বাড়ানোর আবেদন করেছিল স্পন্সর কোম্পানি। এ পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির পারফরম্যান্স ও অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করে চুক্তির মেয়াদ তিন বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ধিত চুক্তির মেয়াদ ২০১৬ সালের ১২ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে সূত্র জানায়। সে হিসাবে আগামী বছর ১১ জুলাই স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে।
সূত্রমতে, বর্ধিত চুক্তিতে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার আগের চেয়ে ২৭ পয়সা কমানো হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
সরকারের ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান ২০১৬’-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সাল নাগাদ দেশে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদা পূরণে বাস্তবায়নাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু হতে চলতি বছর পর্যন্ত সময় লাগবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়।