Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:19 pm

ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে কমছে না সবজির দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভরা মৌসুমেও বাজারে ৫০ টাকার কমে সবজি মিলছে না। কাঁচা পেঁপে ও মুলার দাম কিছুটা কম হলেও শিম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ টাকা ও লাউ ১০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আর গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালসহ বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, আটা, ময়দা, ডাল, ছোলা, আদা, রসুনসহ আরও বেশ কিছু পণ্যের মূল্য। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচন ঘিরে কয়েক দিন প্রায় সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। সরবরাহ বিঘিœত হওয়ায় পণ্যের দাম বেড়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, যে কোনো অছিলায় ব্যবসায়ীরা হুটহাট পণ্যের দাম বাড়ায়। মানুষকে তারা জিম্মি করে ফেলেছে। তারা বলছেন, জনজীবনে স্বস্তি ফেরাতে দ্রæত এই বাজার সিন্ডিকেট ভাঙা প্রয়োজন।

বাজারে নাহিদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, জিনিসপত্রের বাড়তি দাম যেন দেখার কেউ নেই। যার যেভাবে খুশি, সেভাবে দাম বাড়াচ্ছে। ভুগছি শুধু আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরা।

এদিকে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সরু (মিনিকেট) চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা দরে, যা ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা ছিল। মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চালের কেজিতে সর্বোচ্চ তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। দুই টাকা বেড়ে মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।

কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া সবজির দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। কাঁচা পেঁপে ও মুলা ছাড়া ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই। ভরা মৌসুমে শিম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। একটি লাউয়ের দাম ঠেকেছে ১০০ টাকায়। বাজারে বছরজুড়ে পাওয়া যায় এমন গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা ও বরবটির কেজিও ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

অন্যদিকে হুট করে দুদিনের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা, যা দুদিন আগেও ২০০ থেকে ২০৫ টাকা ছিল। সোনালি জাতের মুরগির দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়।

এছাড়া গরুর মাংসের বেঁধে দেওয়া দাম ৬৫০ টাকা হলেও রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে ওই দামে গরুর মাংস মিলছে না। প্রতি কেজি গরুর মাংস এখন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ মাংস বিক্রির দোকানে নেই মূল্যতালিকাও। সেগুনবাগিচা বাজারে দুটি মাংসের দোকান। সেখানে ৭০০ টাকায় মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। মাংসের সঙ্গে মাছের বাজারও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। রুই ও কাতল আকারভেদে ৩০০ থেকে ৪৫৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের কই ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি কই বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।  এছাড়া পাবদা ৩০০, তেলাপিয়া ২৫০ এবং পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। তবে অন্যান্য দিনের মতোই চাষের মাছের চেয়ে নদীর মাছের দাম ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি।

মুদি বাজারে আগে ছোলার কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন তা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের চেয়ে ১০ টাকা বেশি।

বাজারে আটা, ময়দা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম বেড়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে।

এখন বাজারে প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এছাড়া বাজারে পেঁয়াজের দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রসুনের ও আদার দাম বেড়ে বাজারে দুটি মসলাই এখন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।