ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

‘আবারও বাড়ছে সয়াবিন তেলের দাম’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা স্বভাবত সাধারণ মানুষকে হতাশ করবে। এতে বলা হয়, মুদি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘দাম আরও বাড়তে পারে। পণ্য সাপ্লাই কম। চাহিদামতো অর্ডার মিলছে না। বলে দু-এক দিন পর দিচ্ছি। এমন সব কথা বলে ডিলাররা সয়াবিন তেল দিতে গড়িমসি করছে। একই সঙ্গে দামও বেশি নিচ্ছে।’

রমজান মাস শুরুর পর থেকে গত এক সপ্তাহে প্রতি লিটারে দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বেড়েছে কেজিতে আট থেকে ১০ টাকা। ভোজ্যতেলের দাম কমাতে বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাট কমিয়েছে সরকার। এরপর নির্ধারণ করা হয় নতুন দর। তারপরও বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

রমজান মাস শুরুর আগেই কয়েক দফা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। দাম যাতে আর না বাড়ে সে লক্ষ্যে করছাড় দিয়েছে সরকার। তাই ধারণা করা হয়েছিল, দাম না কমলেও আর বাড়বে না। কিন্তু বেড়েছে। সরকার কঠোর হবে না, ব্যবসায়ীরা দায়িত্বশীল আচরণ করবেন না; হাপিত্যেশ করা সাধারণ মানুষের আর কী-ই বা করার আছে! 

ইদানীং এফবিসিসিআই সভাপতি ঘুরেফিরে একই কথা বলছেন বারবার, আমি অসাধু ব্যবসায়ীদের নেতা হতে চাই না। তার বক্তব্যে কিছুটা আশার সম্ভাবনা জাগলেও তার সহযোগী ব্যবসায়ীদের আচরণ অপ্রত্যাশিত। ব্যবসায়ীরা অজুহাত পেলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। তারা অজুহাত তৈরিও করেন। এফবিসিসিআই সভাপতি সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, বাজারে নজরদারি বাড়াতে। কিন্তু সরকার যতই নজরদারি করুক, ব্যবসায়ীদেরও সৎ হতে হবে। মানুষের দুর্ভোগকে পুঁজি করে অতি মুনাফা করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে তাদের।

ভোজ্যতেলের কারসাজি নির্মূলে প্রতিযোগিতা কমিশনের অনুসন্ধান দল ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর গুদাম ও শোধনাগার পরিদর্শন করছে। অনুসন্ধানকালে ভোজ্যতেলের উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ শৃঙ্খল, স্থিতি, এসও ডেলিভারি সিস্টেম-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে। এসব তথ্য আদৌ সঠিক আছে কি না, তাও যাছাই করতে হবে।

উৎপাদন, বিপণন, মজুত ও আমদানিতে রেকর্ড এবং কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি থাকলে ভোজ্যতেলের দামে ঊর্ধ্বগতির কারণ খুঁজে বের করতে হবে। প্রতি বছর ভোজ্যতেল আমদানিবাবদ বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন সীমিত আয়ের জনগোষ্ঠী। টিসিবির পণ্য নিন্ম আয়ের মানুষজনই কেনেন না, অপেক্ষাকৃত সামর্থ্যবান বলে পরিচিতিরাও কেনেন। রাত ১১টায় টিসিবির ট্রাকের সামনে পণ্য কেনার লাইনে ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতিও চোখে পড়ে। এই স্থানে পণ্য কিনতে না পেরে ট্রাকের খোঁজে গরিব মানুষের ছোটাছুটি নিত্যদিনের দৃশ্য। সব ট্রাকের সামনেই বড় লাইন। পণ্য না পেয়ে লাইনের অনেককে খালি হাতে ফিরতে হয়। আসলে মানুষের অনেক অভাব। মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনায় সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেই প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০