ভোটারদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে নির্বাচনের ফলাফলে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বিরোধীদলীয় নেতারা মনে করেন রংপুর-গাজীপুরে নির্বাচনের ফলাফল ভোটারদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের প্রকাশ। এ কথাটি তারা বলেছেন, ‘রাজনৈতিক সংকট ও রাষ্ট্রের গতিপথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায়।

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণসংহতি আন্দোলনের আয়োজনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

সভায় বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আজ ভোর শুরু হয়েছে বিশাল এক নৌকাডুবি দিয়ে। এই নৌকাডুবি কয়েক মাস আগে হয়েছে রংপুর সিটি  নির্বাচনে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, মানুষ ভোট চোর ভোট ডাকাতদের ক্ষমা করে না। রংপুরের লোকজন সে কথা রেখেছে। নৌকার প্রার্থীকে তারা চার নম্বরে নামিয়ে দিয়েছিল। তার প্রায় জামানত হারানোর মতো অবস্থায় গিয়েছিল।

তিনি বলেন, গাজীপুরের পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। তবে এখানেও মানুষের যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ, সেটা প্রকাশ পেয়েছে। আজমত উল্লাহ নিশ্চয়ই একজন পরীক্ষিত রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু আওয়ামী লীগের পাপের বোঝা তিনি আর বহন করতে পারছিলেন না। ফলে গাজীপুরের মানুষের, ভোটারের যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ, সেটা প্রকাশ পেয়েছে ফলাফলের মাধ্যমে।

সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের দেশে দর্শনের দরিদ্রতা খুবই বড় একটা দারিদ্র্য। নৈতিকতার সংকটটা খুবই বড় সংকট। আমাদের অধ্যাপকরা সিনেমার নায়িকার হাতে হাত ধরে বক্তৃতা করতে পারেন। দরকার হলে আরও পাঁচ বছরের জন্য এ সরকারকে বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকতে দেয়ার কথা বলতে পারেন। আমাদের সবচেয়ে বড় জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়, যেটা নৈতিকতা ও লড়াইয়ের জায়গা, সেটা কোথায় গেছে সেটা তো দেখছি না আমি। নৈতিক লড়াই তো রাজনৈতিক দলই করবে। গণতন্ত্রের লড়াই, বিজয়ের জন্য লড়াইÑসেই লড়াই রাজনৈতিক দলেরই করতে হবে। সেখানে আমি আমার সামনে কিছু আইকন রাখি। সেই আইকন মানে তিনি কত বড় ব্যক্তি সেটা নয়। তার ভেতরের নির্যাসটা, তার অস্তিত্ব, তার সারসংক্ষেপ, যার সবকিছু তার মধ্যে আছে। যেটা নিয়েই তিনি পূর্ণাঙ্গ মানুষ এবং পরিপূর্ণ অবয়ব। সেটা নিয়েই আমি জনগণের সামনে যেতে চাই, সমাজটা বদলাতে চাই, মানুষের গণতন্ত্র নিরাপদ করতে চাই। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান নিরাপদ করতে চাই।

মান্না আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের জেলা কমিটির নেতা বলেছেন, ‘আমি আপনার জন্য কবর রচনা করব।’ এ রকম কথা আমরা প্রতিনিয়তই বলি। হয়তো তার কথাটা শুনতে খারাপ লেগেছে। সেজন্য তার বিপক্ষে বক্তব্য রাখাই যুক্তিসংগত। কিন্তু একদম নতি স্বীকার করতে হবে, সেটা কেমন কথা? এরকম ভুল আপনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রতিনিয়ত করেন। আপনি ৭৮ বছর বয়সী, তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ফেলে দিতে চান, সেটা তো মৃত্যুরই শামিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০