ভোটের মাঠে বিজিবি-র‌্যাব টহল, তল্লাশি শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে মাঠে নেমেছে এক হাজার ১৫১ প্লাটুন বিজিবি। আর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সব নির্বাচনী এলাকায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মোতায়েন করা হয়েছে। ভোট ঘিরে গতকাল শুক্রবার থেকে ১৩ দিনের জন্য মাঠে নেমেছেন বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা। এদিন সারাদেশের নির্বাচনী আসনগুলোয় বিজিবির টহল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তল্লাশি করছে র‌্যাব।

গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবির সদর দপ্তর জানায়, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশের নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। সাধারণত প্রতি প্লাটুনে ৩০ বিজিবি সদস্য থাকেন।

অন্য এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানিয়েছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সমগ্র দেশের নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, র‌্যাব ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সব নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, র‌্যাব নির্বাচনী এলাকায় সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা দেবে। এছাড়া ভোটকেন্দ্র ও ভোট গণনার ক্ষেত্রে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিটি আসনে কমপক্ষে দুটি টহল দল মোতায়েন এবং প্রতিটি ব্যাটালিয়নে দুটি টহল স্ট্রাইকিং দল রিজার্ভ থাকবে। র‌্যাব সদর দপ্তরে ১৫টি টহল দল সেন্ট্রাল রিজার্ভ হিসেবে প্রস্তুত থাকবে এবং দেশব্যাপী ২৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। এছাড়া মোতায়েনের জন্য ৫০টি টহল দল প্রস্তুত থাকবে। দেশব্যাপী সাতশ’র বেশি টহল দল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং নিজস্ব সুইপিং ও বম ডিসপোজাল টিম প্রস্তুত থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড কাজে লাগানো হবে। ঝুঁকিপূর্ণ/গুরুত্বপূর্ণ আসন বিবেচনায় মোতায়েনের জন্য বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন থেকে টহল দলগুলোকে সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রাখা হবে। বিশেষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের স্পেশাল ফোর্স সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।

র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের বম ডিসপোজাল ইউনিট সাতটি জোনে বিভক্ত হয়ে মোতায়েনের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে। র‌্যাব ডগ স্কোয়াডের ১০টি দল র‌্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে। এছাড়া দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য ও গোয়েন্দা সূত্রে ঝুঁকিপূর্ণ আসনগুলোয় বেশি টহল রাখার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

বিএনপির বর্জনের মধ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাতে অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ২৭টি দল। সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে সাত লাখ নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে ভোটের মাঠে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এবার পাঁচ লাখ ১৬ হাজার আনসার সদস্য, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য, দুই হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড সদস্য এবং ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি সদস্য থাকবেন। তাদের সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে।

১১ কোটি ৯৭ লাখ ভোটারের এই নির্বাচনে ৪২ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্রপ্রতি ১৫ থেকে ১৭ নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকবে। স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনী। ভোটের আগে-পরের ১৩ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০