নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। না করলে আরও দুর্বার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে ‘ডামি সরকারের’ পতন ঘটানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ভোট বর্জন করে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উদ্ভট, গণবর্জিত ও প্রহসনের ভোট ডাকাতির মঞ্চায়ন দেখেছে বিশ্ববাসী। তবে শত ভয়ভীতি, নির্যাতন, প্রলোভন ও সরকারের সাঁড়াশি চাপের পরও ভোট না দিয়ে দেশের মানুষ এই নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ডামি নির্বাচনে ভোট বর্জনকারী জনতার আসল বিজয় হয়েছে বলে দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অপদস্থমূলক লজ্জার পরাজয় হয়েছে। এই নির্বাচনের দিনটি আজীবন একটি জঘন্য কালো দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
রুহুল কবির বলেন, ভোটের দিন বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোটের ঘোষণা দিয়েও গণভবনের চাপে আবার এক ঘণ্টা পরই সেটা ৪০ শতাংশ এবং সোমবার দুপুরে তা আরও বাড়িয়ে ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ করা হয়। তবে পাতানো এই ডামি নির্বাচনের ফাঁদে দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ পা দেয়নি। তাই সারাদেশের কেন্দ্রগুলো ছিল ভোটারশূন্য।
রুহুল কবির বলেন, জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব ভোটারবিহীন একতরফা এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক জেজ কৌলসন বলেছেন, ‘আই ফাউন্ড দ্য নর্থ কোরিয়া মডেল হিয়ার,’ অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার স্টাইলের একদলীয় নির্বাচন হয়েছে।
দলমত-নির্বিশেষে সরকার পতনের আন্দোলনে দেশের জনগণকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রুহুল কবির। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ ‘ডামি সরকার’ দিয়ে দেশ চলতে পারে না। গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন এগিয়ে যাবে। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের তথ্য তুলে ধরেন রিজভী। তার দাবি, এ সময়ে ১০৭ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চারটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩৮৬ নেতা-কর্মীকে।