ভোলার মেঘনায় মিলছে না ইলিশ কষ্টে দিন কাটছে জেলেদের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আটজন জেলে সারাদিন নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে ২২শ’ টাকার মাছ বিক্রি করেছি, তেলসহ অন্য খরচ পুষিয়ে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে, কীভাবে দিন কাটাব? আগে-তো ভালোই মাছ পাওয়া যেত। এখন সারাদিন জাল বেয়েও তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে। নদীতে কাক্সিক্ষত পরিমাণ ইলিশ না পেয়ে এ কথাগুলোই বলছিলেন ভোলা সদরের শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল-সংলগ্ন এলাকার জেলে কাসেম মাঝি। তিনি বলেন, এ বর্ষা মৌসুমে নদীতে গিয়ে অনেক জেলেকেই ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

হোসেন নামে আরও এক জেলে বলেন, পরিবারে সাত সদস্য, প্রতিদিন চাল, ডাল ও অন্য খরচ করতে হয়। কিন্তু নদীতে গিয়ে যদি মাছ না পাই, তাহলে সংসার চালানোই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নদীতে মাছ না পাওয়ায় এমন সংকট শুধু কাসেম ও হোসেনের নয়, এমন সমস্যা এখন অনেকের। একদিকে ঋণের বোঝা অন্যদিকে সংসারের চিন্তা মাথায় নিয়ে নদীতে গেলেও কাক্সিক্ষত পরিমাণ মাছ না পাওয়ায় হতাশ তারা।

উপকূলের বিভিন্ন মৎস্য ঘাট ঘুরে জানা যায়, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে নিবন্ধিত এক লাখ ৩০ হাজারসহ প্রায় দুই লক্ষাধিক জেলে। মাছ শিকারের আশায় প্রতিদিন তারা জাল, ট্রলার ও নৌকাসহ মাছ ধরার অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে নেমে পড়েন নদীতে। ইলিশের দেখা পাওয়ায় এতদিন ভালোভাবে দিন কাটিয়েছিলেন তারা। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে হঠাৎ করেই মাছের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। সারাদিন জাল বেয়ে মিলছে না কাক্সিক্ষত পরিমাণ ইলিশ। এতে চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন জেলেরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।

উপকূলের জেলে হোসেন বলেন, আমরা নদী ও সাগরে মাছ শিকার করি, প্রতি খেও দিয়ে ফিরে আসতে ৫-৭ দিন লাগে। এতে যে পরিমাণ খরচ হয়, সেই টাকার মাছ কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলে ছিদ্দিক বলেন, অন্য বছর এমন দিনে মাছের দেখা মিলত কিন্তু এ বছর মাছের আমদানি খুবই কম।

এদিকে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় আড়ৎগুলো জমে উঠছে না, এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে জেলে ও মৎস্যজীবীদের।

ভোলার খাল ঘাটের মৎস্য আড়তদার মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আগে যখন ভালো মাছ পাওয়া যেত তখন এ ঘাট থেকে ৪০/৫০ লাখ টাকার মাছ পাঠানো হতো কিন্তু এখন সব মিলিয়ে দুই লাখ টাকার মাছও বিক্রি হয় না। এতে আমাদের সংকটে জেলেরাও ভালো নেই।

তবে খুব শিগগির নদীতে ইলিশ মিলবে বলে মনে করছেন ভোলা সদর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, অল্প দিনের মধ্যে সাগর থেকে ইলিশ উজানের দিকে উঠা শুরু করবে, তখন নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশের দেখা মিলবে। বর্তমানে জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ ও করোনা কারণেও ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। আশা করি এর মধ্য দিয়ে তারা সংকট দূর করতে পারবেন। নদীতে মাছ পাওয়া গেলে জেলেদের অভাব থাকবে না।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০