Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 7:58 pm

ভ্যাটের ৫০% রেয়াত দিয়ে রেস্তোরাঁ খাতকে শিল্পের মর্যাদার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি অবকাঠামো ও স্বাভাবিক সহযোগিতার মাধ্যমে দুই কোটিরও বেশি সংখ্যক মানুষ নিয়োজিত রেস্তোরাঁ খাতকে শিল্পের মর্যাদার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের মহাসচিব ভ্রাম্যমাণ আদালতের হয়রানিমূলক অভিযান ও লাইসেন্সের নামে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খাত পরিচালনার জন্য সরকারি ১১টি সংস্থায় নিবন্ধন নিতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, কারখানা লাইসেন্সসহ বিভিন্ন নিবন্ধনের নামে প্রতি বছর নতুন করে লাইসেন্স বা নবায়নে ছোট ছোট উদ্যোক্তার অনেক হয়রানির শিকার হওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এতগুলো প্রতিষ্ঠানের কাছে না গিয়ে ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের ন্যায় টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে একটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে রেস্তোরাঁ খাতে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা বলেছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে সারাদেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন আমলারা। সরকারি সাতটি সংস্থা আলাদাভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরির দাবি জানান তারা।

হয়রানিমূলক ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানের বিষয়ে প্রশ্ন রেখে বলেন সারাদেশে রাস্তার পাশে যেখানে সেখানে অস্বাস্থ্যকর স্ট্রিট-ফুডের দোকান রয়েছে, সেখানে নজর না দিয়ে বড় রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে তারা আসলে কী প্রমাণ করতে চায়?

তারা বলেন, রেস্তোরাঁকে জরিমানার আওতায় আনার আগে হলে মালিক-শ্রমিক সবাইকে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক। ১৫ বা ৩০ দিনের ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে সার্টিফিকেট দেয়া হোক এবং এরপর নিয়মনীতির বাইরে কিছু হলে জরিমানা করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্সের অনলাইন ডেলিভারির সেচ্ছাচারিতা তুলে ধরা হয়। প্রথম দিকে অল্পকিছু কমিশনে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে সুযোগ বুঝে ৩০-৪০ শতাংশের জন্য চড়াও হচ্ছে অনলাইন ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য এ ব্যবসাকে সরকারি নীতিমালার আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়।

ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায় প্রদান প্রসঙ্গে ৫০ শতাংশ রেয়াত সুবিধা প্রদানের জন্য প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হারে ভ্যাট আদায় করে সম্পূর্ণ টাকা ট্রেজারি চালনের মাধ্যমে জমা দিয়ে থাকে। ভ্যাট আইনে উক্ত আদায়কৃত অর্থের মাধ্যমে রেয়াত অন্তর্ভুক্ত আছে, যা একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর প্রাপ্তির অধিকার সংরক্ষণ করে। ব্যবসার স্থাপনা, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানি বিলসহ অন্যান্য ক্রয়কৃত পণ্যে এবং সেবা যেখানে ভ্যাট প্রদান করা হয়েছে, সেগুলোকে উপকরণ বিবেচনা করে আদায়কৃত ভ্যাটের ৫০ শতাংশ রেয়াত সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করে।

সংবাদ সম্মেলনে রেস্তোরাঁ খাত থেকে সম্পূরক কর বাদ এবং সর্বত্র বিনা মূল্যে ইএফডি মেশিন দেয়ারও প্রস্তাব পেশ করা হয়।