Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 5:16 pm

ভ্যাটে সমতা চান সুপার শপ মালিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েক দশক ধরেই বিশ্বজুড়ে উন্নত অর্থনীতিতে সুপার শপ ব্যবসা পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব দেশে ভোক্তা সাধারণের কাছে এ মার্কেটগুলো বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ভ্যাট অসমতায় বাংলাদেশে এ গতিশীল খাত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। এ ব্যবসাকে জনপ্রিয়, গ্রাহকদের উন্নত ও নিরাপদ পণ্য সরবরাহ এবং নিরাপদ কেনাকাটার জন্য সুপার মার্কেট ও ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মধ্যে ভ্যাট সমতা আনার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিওএ)।

রাজধানীল সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে গতকাল হোটেল, রেস্টুরেন্ট, গেস্ট হাউজ ও বিবিধ সেবা, কাগজ, মুদ্রণ, প্রকাশনা, চলচ্চিত্র এবং বিজ্ঞাপন, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ সুপারিশ করা হয়। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন।

বিসিওএর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে সুপার মার্কেট ব্যবসার যাত্রা। সারাবিশ্বেই সুপার মার্কেট সংস্কৃতি অনেক জনপ্রিয়তা পেলেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে এ শিল্প ভূমিকা রাখছে। ফলে প্রতিটি দেশে এ শিল্প ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা ছাড়াও অন্যান্য প্রণোদনা দিয়েছে। বাংলাদেশে তার ব্যতিক্রম। একই ছাদের নিচে সব ধরনের নিরাপদ খাদ্য ও পণ্য দেওয়ায় আমাদের লক্ষ্য। মানসম্পন্ন পণ্য পাওয়ায় ভোক্তারা এখন সুপার মার্কেটে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু ভ্যাটের অসমতার কারণে আমাদের ব্যবসায় প্রসার হচ্ছে না। একটি পণ্য সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কিনলে ভ্যাট দিতে হয় না। তাদের ভ্যাট নেওয়ার ইসিআর মেশিন নেই। একই পণ্য সুপার শপ থেকে কিনলে চার শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। সুপার শপে ভ্যাট থাকায় মানসম্পন্ন পণ্য হলেও ভোক্তা সুপার মার্কেটমুখী হয় না। উন্নত পণ্য দিয়েও আমরা ভোক্তাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এ নিয়ে বহুবার বলার পরও ভ্যাট প্রত্যাহার হয়নি।

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বড় বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে দেখা প্যাকেজ ভ্যাট দেয়। সুপার মার্কেটে যেহেতু ইসিআর আছে সেহেতু তাদের বিক্রির রেকর্ড বেশি ও স্বচ্ছ। অন্য প্রতিষ্ঠানে ১০ কোটি টাকা বিক্রি করলেও বলে বিক্রি হয়েছে দুই কোটি টাকা। কারণ তাদের রেকর্ড নেই। সুপার মার্কেটে চার শতাংশ ভ্যাট এ খাতে অনেক বেশি। সুপার মার্কেটকে প্যাকেজ ভ্যাটের আওতা বা অন্য কোনো কায়দায় ভ্যাট নেওয়া যায় কিনাÑতা আমরা দেখব।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এর মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ বলেন, বাংলাদেশে চলাচলকারী এয়ারলাইন্সের টিকিটের মধ্যে মাত্র ৩৪ শতাংশ টিকিট ট্রাভেল ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বিক্রি করে থাকে। যা  থেকে সরকার ১৫ শতাংশ ভ্যাট পায়। বাকি ৩১ শতাংশ বিদেশ বা আউট স্টেশন, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি চার শতাংশ, ক্রেডিট কার্ডে চার শতাংশ, বাজেট ক্যারিয়ারে ২২ শতাংশ ও ডিরেক্ট এয়ারলাইন্স সেলে পাঁচ শতাংশসহ ৬৬ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয় যাতে সরকার কোনো ভ্যাট পায় না। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান বিদেশি ব্যবসা করে। স্থানীয়ভাবে কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের আইডি, পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ভ্যাট, ট্যাক্স ছাড়াই টিকিট বিক্রি করছে। টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ভ্যাট, ট্যাক্স কেটে নেওয়া হলে সমতা ফিরবে, কেউ ফাঁকি দিতে পারবে না।

বাংলাদেশ সিকিউরিটি সার্ভিসেস কোম্পানিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. শাহ আলম সরকার বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি পর্যায়ে নিরাপত্তা সেবা প্রদান করছে প্রায় সাত শতাধিক প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানি। এ খাতের সঙ্গে কয়েক লাখ লোক জড়িত। এ খাতের দ্রুত বিকাশের লক্ষ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত করপোরেট কর, ভ্যাট, উৎসে কর ও টার্নওভার কর তথা কর অবকাশ সুবিধা প্রদানের দাবি জানান তিনি।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ভ্যাট নিয়ে জটিলতা রয়েছে। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে আমরা দুবছর সময় পেয়েছি। এ দুবছরের মধ্যে আমরা এ জটিলতা দূর করব, যাতে দুবছর পর ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে সমস্যা না হয়। ভ্যাট ১৫ শতাংশ নয় কয়েক স্তরে করা হবে।