নিজস্ব প্রতিবেদক: ভ্যাট আদায়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করলে রাজস্ব আয় কয়েকগুণ বাড়বে। সে ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার কমিয়ে শতকরা সাতভাগ করা হলেও বর্তমানের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভ্যাট আদায় হবে। এজন্য প্রত্যেকটি দোকান, ব্যবসা ও সেবাকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার স্থাপন করতে হবে। যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সার্ভারের সঙ্গে সংযোগ থাকবে। তাহলে জনগণ ভ্যাট প্রদান করার সঙ্গে সঙ্গেই তা সার্ভারে চলে যাবে। আমাদের দেশে জনগণ যথাযথভাবে ভ্যাট দিলেও তার পুরোটা সরকারি কোষাগারে জমা হয় না।
গতকাল ইনস্টিটিউট অব কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) আয়োজিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আদায়ে ব্যক্তির ওপর নির্ভরতার কারণে অনেক সিস্টেম লস হচ্ছে। সরকারের সঠিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। গ্রামের দোকানেও এখন অনেক আধুনিক ও উন্নমানের পণ্যসামগ্রী দেখা যায়। সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তাই গ্রামের দোকানেও ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার চালু করা সম্ভব। গ্রামাঞ্চলেও অনেক মানুষই করযোগ্য আয় করেন। তাই কর আহরণের পরিধিও বাড়িয়ে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকেও করের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে কর আহরণকে আরও সহজ করতে হবে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ৩৫ লাখ লোকের ইটিআইএন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, সরকার অব্যাহতভাবে বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর প্রভাবে গ্রামীণ যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়েছে। বাজেটের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ফলে খাদ্য উৎপাদন, পুষ্টিমান উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ অনেক ক্ষেত্রেই দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে নির্ধারিত সময়েই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। চলতি বাজেটও দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট
মোহাম্মদ সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটের ওপর দুটি উপস্থাপনা তুলে ধরা হয়। বাজেটের আইনগত বিভিন্ন দিক ও তার সংস্কার বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর অঞ্চল-৭ এর কমিশনার রঞ্জন কুমার ভৌমিক এবং খাতভিত্তিক বরাদ্দ ও রাজস্ব আদায়ের হারের ওপর উপস্থাপনা তুলে ধরেন আইসিএমএবির সচিব অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুর রহমান খান। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সচিব ও ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিকিউকে মুস্তাক আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর নীতি) কানন কুমার রায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ড. জামালউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
