নিজস্ব প্রতিবেদক: ভ্যাট ও আয়কর নিয়ে মাঠপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ সরাসরি তাকে জানাতে বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। গতকাল সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাশেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে আসুন। এফবিসিসিআইয়ের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদের মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কে এ অভিযোগগুলো জানালে আমরা টেক কেয়ার করব। আমি মনে করি সেগুলোর সমাধান খুঁজে বের করতে পারব।’
গত শনিবার এফবিসিসিআইয়ের এক মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, কভিড-১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যেও রাজস্ব আদায় করতে তাদের নানাভাবে হয়রানি ও ভীতির পরিবেশ তৈরি করছেন রাজস্ব কর্মকর্তারা।
এফবিসিসিআইয়ের ‘কাউন্সিল অব চেম্বার প্রেসিডেন্টস, ২০২২’ সভায় এসব অভিযোগ ওঠার কথা তুলে ধরে সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে চাঁদাবাজিরও শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
কভিডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও জেলা পর্যায়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সরকার ঘোষিত প্রণোদনা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। এ কারণে প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের পক্ষে মহামারি-পরবর্তী উত্তরণ কঠিন হয়ে পড়ছে।
এছাড়া ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় অন্তত চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানানোর পাশাপাশি প্রণোদনার ঋণ ছাড়ে বিলম্ব ও অনিয়মের অভিযোগও করেন ব্যবসায়ীরা।
প্রণোদনার ঋণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই রকম জেনারালাইজড প্রশ্ন যদি করেন, তাহলে আমি জবাব দিতে পারব না। জবাব পেতে হলে সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করতে হবে এবং আমাকে সময় দিতে হবে। এটার ওপরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ যেগুলো আছে, সংশ্লিষ্ট ডিভিশনগুলোকে ডেকে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আপনাদের অবহিত করতে পারব।’
বিলম্ব হলেও যাদের জন্য যে প্রণোদনার অর্থ বরাদ্দ, সেই বরাদ্দ সংশ্লিষ্টরা পাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন মুস্তাফা কামাল। তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব প্রণোদনা দিয়েছি, এগুলো যাদের জন্য প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই পাবে। যদি বিলম্ব হয়ে থাকে তাহলে সেটাও বাতিল হয়ে যাবে না। কারণ বাতিলের কোনোরকম ব্যবস্থা নেই। যে শর্তসাপেক্ষে আমরা দিয়েছি, সেই শর্ত পূরণ করলে তারা সেটি পেয়ে যাবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি এখানে ভুল বোঝাবুঝি আছে, হয়তো কোনো কারণ থাকতে পারে। আমি আবারও বলব যদি এমন কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে এগুলো আমাকে দিলে আরও দেখতে পারব এবং আপনাদের ভালোভাবে জবাব দিতে পারব।
ওমিক্রন ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়লেও তা মোকাবিলা সরকার করতে পারবে বলেই মনে করছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তাফা কামাল। এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সবসময় আমাদের সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বিস্তৃত, আমরা সব সময় সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। এজন্য আমরা মনে করি যতটা ভয় পাচ্ছি, ততটা ভয়াবহ কিছু হবে না। আমরা আগে যেভাবে মোকাবিলা করেছি, সেভাবে এবারও মোকাবিলা করতে পারব।’
মহামারির ধাক্কার মধ্যে গ্যাস, সার ও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দাম বাড়িয়েছে? আমার হাত থেকে দাম বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি, আমি এখনও জানি না। বিষয়টি যখন জানব তখন এ বিষয়ে আমি দেখতে পারব। এ বিষয়ে আমি অবশ্যই জানব, যখন জানব তখন আমি ব্যবস্থা নেব। আমার যা করণীয় সেটা অবশ্যই করব।’