নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর রূপায়ণ টাওয়ারের রূপটপে অবস্থিত দ্য গ্রিন লাউঞ্জ। অভিজাত এ রেস্টুরেস্টের বিপুল ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (ভ্যাট গোয়েন্দা)। বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে রেস্টুরেন্টটি ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে। ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন হওয়ায় গতকাল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ড. মইনুল খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল অভিজাত রেস্টুরেন্ট দ্য গ্রিন লাউঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে। রাজধানীর অভিজাত রেস্টুরেন্ট হিসেবে পরিচিত রেস্টুরেন্টটি রূপায়ণ টাওয়ার, ১৪৮ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউর রুফটপে অবস্থিত। যার মূসক নং ০০১০০১৬৮৪০২০৮।
রেস্টুরেন্টটিতে নিয়মিত খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানাদির জন্য বুকিং দেওয়া হয়। ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পান রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের মে থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ২৩ মাসে মোট বিক্রয়ের পরিমাণ দেখিয়েছে এক কোটি ৯৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৯৪ টাকা। এ বিক্রয়ের ওপর তারা ২৩ মাসে ভ্যাট জমা দিয়েছেন মাত্র ২৫ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮ টাকা।
মহাপরিচালক জানান, প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট রিটার্ন অনুযায়ী ঘোষিত মাসিক বিক্রির পরিমাণ মাত্র আট লাখ ৫২ হাজার ৯১৩ টাকা এবং ভ্যাট এক লাখ ১১ হাজার ১৩২ টাকা। ভ্যাট গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে স্থানীয় ভ্যাট অফিসে তাদের দাখিলকৃত মাসিক রিটার্নে এ বিক্রয় তথ্য সন্দেহজনক হওয়ায় এবং একটি অভিযোগের সূত্রে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ থেকে উদ্ধারকৃত কাগজপত্র ও তথ্যে দেখা যায়, মালিকপক্ষ ভ্যাট অফিসের কাছে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছেন। উদ্ধারকৃত কাগজপত্র অনুসারে ২৩ মাসের বিক্রয় হয়েছিল ১৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯২২ টাকা।
ড. মইনুল খান জানান, এ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৩ মাসে রেস্টুরেন্টটি তার প্রকৃত মোট বিক্রয় হিসাবের ৮৭ শতাংশ গোপন করেছেন এবং এর ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১৩ শতাংশ বিক্রি ঘোষণা করেছে। ভ্যাট গোয়েন্দার হিসাব অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি মোট ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
তথ্যে আরও দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি এ ভ্যাট ক্রেতাদের কাছ থেকে বিলের বিপরীতে কেটে রেখেছিলেন। কিন্তু তিনি তা আইন অনুযায়ী সরকারি কোষাগার জমা দেয়নি। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন ও এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ায় গতকাল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এখন হতে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য ঘোষণা ও ভ্যাট প্রদান করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
