নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার অভিজাত ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকার বিক্রি গোপন করার তথ্য উদ্ঘাটন করেছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (ভ্যাট গোয়েন্দা)। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫৮ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে গতকাল প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক জানিয়েছেন, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক অথেলো চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান পরিচালনা করেন। এতে ভ্যাট গোয়েন্দারা ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পান। অভিযানের শুরুতে কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানের মূসক-সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের অনুরোধ করলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (অর্থ) মো. মিজানুর রহমান সিদ্দিকী মূসক-সংক্রান্ত নথিপত্র প্রদর্শন করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে ব্যবহƒত কম্পিউটাসহ অন্য বাণিজ্যিক দলিলাদি তল্লাশি করে বাণিজ্যিক বিক্রয় চালান এবং বিক্রয় রেজিস্টার জব্দ করা হয়।
এতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মোট পাঁচ কোটি ছয় লাখ ৭০ হাজার ৭৯২ টাকার বিক্রি করেছে। কিন্তু এ সময় প্রতিষ্ঠান দাখিলপত্রে চার কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ১৭৮ টাকা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে। দাখিলপত্রে ৪৭ লাখ ৪৪ হাজার ৬১৪ টাকা বিক্রয়তথ্য গোপন করা হয়েছে, যার ওপর পরিহারকৃত মূসক সাত লাখ ১১ হাজার ৬৯২ টাকা। এ ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক দুই শতাংশ হারে সুদ পাঁচ লাখ ১২ হাজার ৪১৮ টাকা প্রযোজ্য। তদন্তে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে মোট পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার ৯৭৪ টাকার বিক্রয়তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু এ সময় প্রতিষ্ঠানটি দাখিলপত্রে তিন কোটি ৮০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৮৭ টাকা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে। এতে দাখিলপত্রে এক কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ১৮৭ টাকা বিক্রয়তথ্য গোপন করেছে, যার ওপর পরিহারকৃত মূসক ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৭৮ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ১৬ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৭ টাকা প্রযোজ্য।
মহাপরিচালক জানান, অভিজাত হোটেলটিতে মাত্র দুই মাসে মূসক বাবদ ৩৬ লাখ ২ হাজার ৬৭০ টাকা এবং সুদ বাবদ ২১ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৬ টাকাসহ সর্বমোট ৫৭ লাখ ৯১ হাজার ৮৫৬ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে। তদন্তে উদ্ঘাটিত পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে মামলাটি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অধিকতর মনিটরিং করার জন্যও সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করা হয়েছে।