নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টির পর চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে সূর্য। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টি হলেও বাকি এলাকাগুলোয় তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। ফলে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী চার দিন অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত এ ভ্যাপসা গরম অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। শুক্রবারের পর বৃষ্টি হয়ে কমে আসতে পারে তাপমাত্রা। এছাড়া মৌসুমের কারণে কালবৈশাখী হয়েও কোথাও কোথাও তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে।
এ ভ্যাপসা গরমের বিষয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘আগামী চার দিন দেশের মধ্যাঞ্চলের এই ভ্যাপসা গরম অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টি হয়ে তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। তবে এর আগে কোথাও যদি কালবৈশাখী ঝড়সহ বৃষ্টি হয়, সেখানেও তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকায় এখন যে তাপমাত্রা তার চেয়ে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে, কারণ বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক বেশি। ঘাম শুকাচ্ছে না, ফলে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।’
এদিকে নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, দিনাজপুর, রংপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ সহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহের ৯ মে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, সঙ্গে ছিল ঈশ্বরদীও। তবে উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কম। গতকাল রংপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ৯ মে ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩০, গতকাল তা চার ডিগ্রি বেড়ে ৩৪ দশমিক ৮; ময়মনসিংহে ছিল ৩১ দশমিক ৫, গতকাল দুই ডিগ্রি বেড়ে ৩৩ দশমিক ৫; চট্টগ্রামে ছিল ৩১ দশমিক ৮, গতকাল তা তিন ডিগ্রি বেড়ে ৩৪; সিলেটে ছিল ৩১ দশমিক ২, গতকাল ৩১ দশমিক ৫; রংপুরে ছিল ৩৪ দশমিক ৭, গতকাল বৃষ্টির কারণে কিছুটা কমে ৩২; খুলনায় ছিল ৩১, গতকাল চার ডিগ্রি বেড়ে ৩৫ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ছিল ২৯ দশমিক ৮, গতকাল তা পাঁচ ডিগ্রি বেড়ে ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিরাজমান রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।