নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মতিউরের বিষয়ে তদন্ত শুরুর পর এই চিঠি দিল দুদক। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র গতকাল রোববার সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য চেয়ে এনবিআর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), নিবন্ধন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুদক।
১৫ লাখ টাকায় (প্রাথমিক দর) ‘উচ্চবংশীয়’ ছাগলকে কেন্দ্র করে ঈদের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল (ছড়িয়ে পড়া) হন মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাত। এর পর থেকে তার বিলাসী জীবনযাপনের নানা তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই ছাগলকাণ্ডের জেরে আলোচনায় আসেন ইফাতের বাবা এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান। তখন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিপুল সম্পদের তথ্যও সামনে আসতে শুরু করে।
দুদক অনুসন্ধান শুরুর পর ২৫ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার (এমএফএস) হিসাব ও পুঁজিবাজারের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ।
সরকারি কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার স্বজনদের নামে অন্তত ৬৫ বিঘা (দুই হাজার ১৪৫ শতাংশ) জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, যশোর ও নাটোরে মোট ৮৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ (২৫ দশমিক ৭০ বিঘা) জমি রয়েছে। আর ঢাকাতেই তার নামে ফ্ল্যাট রয়েছে অন্তত চারটি। ২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর বিবরণীতে লায়লা কানিজ তার মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ১০ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার টাকা।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম বলেছেন, মতিউর রহমান, লায়লা কানিজ, তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য ২৪ জুন তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে আজ মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।