শাহরিয়ার সিফাত: টাঙ্গাইলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিদর্শনগুলোর মধ্যে মধুপুর গড়ের শালবন অন্যতম। এই বনে রয়েছে দেখার মতো অনেক কিছু। এর মধ্যে সবুজ গাছ-গাছালি আর নানা বন্য পশুপাখির সঙ্গে রয়েছে আদিবাসীদের গ্রাম। আর সে এলাকাগুলো নিয়েই তৈরি হয়েছে মধুপুর জাতীয় উদ্যান।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আয়তন ২০ হাজার ৮৪০ একর। প্রধান ফটক দিয়ে বনের মধ্যে ঢোকার পর চোখে পড়ে শুধু শালবন আর সবুজের সমারোহ। বনের অভ্যন্তরে আছে নানা জাতের, নানা বাহারের গাছগাছড়া। যেমন শাল, বহেড়া, আমলকী, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বত্থ, বট, সর্পগন্ধা, শতমূলি, জয়না, বিধা, আজুকি বা হারগাজা, বেহুলা প্রভৃতি। আছে বিভিন্ন প্রজাতির পাহাড়ি আলু ও শটি। নাম না জানা বিচিত্র ধরনের লতা-গুল্ম রয়েছে এখানে। প্রাণীর মধ্যে আছে বানর ও হনুমান। আছে বিভিন্ন জাতের পাখপাখালি, হরিণ, বনবিড়াল, বনমোরগ, বাঘডাসা প্রভৃতি। বনের ঠিক মাঝখানে আছে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। লহরিয়া বিট অফিস সংলগ্ন এ কেন্দ্রে দেখতে পাওয়া যায় চোখজুড়ানো চিত্রা হরিণের বিচরণ। পাশের সুউচ্চ টাওয়ারে উঠলে মধুপুর পার্কের অভ্যন্তরে সবুজ গাছপালা দেখে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মুগ্ধ হতে হয়।
বন দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেলে বিশ্রাম নিতে পারেন গেস্টহাউজে। এখানে কয়েকটি গেস্টহাউজ রয়েছে। দোখলা রেস্টহাউজ, চুনিয়া কটেজ, বকুল কটেজ প্রভৃতি। দুটি পিকনিক স্পট, জুঁই ও চামেলি বাগান রয়েছে একই স্থানে। আছে একটি ইয়ুথ হোস্টেল ও একটি সুউচ্চ টাওয়ার। খেলার মাঠ, পানীয়জল, টয়লেট, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আছে এখানে। এর পাশেই আছে একটি ছোট্ট বাজার। প্রসঙ্গত, মধুপুর বনাঞ্চলের অরনখোলা মৌজার বনভ‚মিতে অবস্থিত বন বিশ্রামাগারটিই দোখলা রেস্টহাউজ। টাঙ্গাইল সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রসুলপুর থেকে আট কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এর অবস্থান।
যাতায়াত ব্যবস্থা
রাজধানীর মহাখালী থেকে সরাসরি মধুপুরের বাস রয়েছে। ভাড়া বাসভেদে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। মধুপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রাবার বাগান ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাসস্ট্যান্ড থেকে রাবার বাগানে অটোরিকশা, সিএনজি অথবা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে যাওয়া যায়। অটোরিকশায় ভাড়া ২৫ থেকে ৩৫ টাকা। তবে মোটরসাইকেলে ভাড়া একটু বেশি হলেও বাগানের ভেতর ঘোরার জন্য এই যানই ভালো। পুরো বাগান ঘোরার জন্য মোটরসাইকেলে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা লাগতে পারে।