নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারও বাড়ানো হল সব ধরনের জ্বালানি তেলের দম। গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেলের খুচরা মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, পেট্রোল ১৩০ টাকা ও অকটেন ১৩৫ টাকা। আজ রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে বর্ধিত দাম কার্যকর হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়। সে সময় এ দুই ধরনের জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৮০ টাকা প্রতি লিটার। আর পেট্রোল ও অকটেনের দাম সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল নির্ধারণ করা হয়েছিল। গতকাল পর্যন্ত এ দুটি জ্বালানি পণ্যের দাম ছিল লিটারপ্রতি ৮৬ টাকা ও ৮৯ টাকা।
এ হিসাবে কেরোসিন ও ডিজেলের মূল্য বেড়েছে লিটারে ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ, পেট্রোলের ৫১ দশমিক ১৬ শতাংশ ও অকটেনের ৫১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ণ রিফাইনারী লিমিটেডের (ইআরএল) পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্টোলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে পুণঃনির্ধারণ করা হলো।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করে নাই। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা সমন্বয়ে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত গত ২২মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে, যা অদ্যাবধি বিদ্যমান রয়েছে। এই মূল্য বাংলাদেশী টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি=১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রোল লিটারপ্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবী।
উল্লেখ্য, বিপিসি গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্র করে আট হাজার ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।