নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব জ্বালানির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে সোলার, বায়ু ও বায়োগ্যস মিলিয়ে প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে পরিচ্ছন্ন উৎস থেকে। ২০২১ সাল নাগাদ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। এছাড়া চর ও উপকূলীয় এলাকাকে বিশেষভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এরই মধ্যে ভোলার মনপুরা উপজেলাকে শতভাগ পরিচ্ছন্ন জ্বালানিনির্ভর উপজেলা হিসেবে ঘোষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল এক সেমিনারে এসব তথ্য জানান টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘৯ম আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিড) এক্সপো ও ডায়ালগ’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, গুণগত মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসাশ্রয়ী প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ ব্যবহারে প্রণোদনা প্রয়োজন। প্রক্রিয়াটি স্রেডাকেই শুরু করতে হবে। শিল্পকারখানায় কো-জেনারেশনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব। নিজেদের পর্যায় থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে।
চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী ও সংলাপে ৩২ বিশেষজ্ঞ সবুজ অবকাঠামোর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ওপর আয়োজিত বিভিন্ন সংলাপে অংশ নেন। এতে সাতটি দেশের ৬২টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন শিল্পপণ্য এই প্রদর্শনীতে স্থান পায়। স্রেডার সদস্য সিদ্দিক যোবায়েরের সঞ্চালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্রেডার চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন, ওয়ার্ল£ ব্যাংকের সিনিয়র এনার্জি বিশেষজ্ঞ ড. অশোক সরকার ও এডিবির ক্লিন এনার্জি অ্যাডভাইজার পিটার ডু পন্ট বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্রেডার চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এ বছরই মনপুরাকে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই উপজেলার নাম দেওয়া হচ্ছে সূর্যনগর। এটি হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রতীক। আমাদের দেশেও উন্নত দেশের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে উদ্যোগ চলছে। এই মুহূর্তে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন হচ্ছে ২৪৯ মোগাওয়াট। বায়ুবিদ্যুৎ ২ দশমিক ৯০ মেগাওয়াট, হাইড্রোপাওয়ার ২৩০ মেগাওয়াট। এছাড়া এক মেগাওয়াটের মতো হচ্ছে বায়োগ্যাস ও বায়োম্যাস বিদ্যুৎ। এই পরিমাণ দুই হাজার ৮৯৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে ২০২১ সালের মধ্যে। যুগপৎভাবেই সাধারণ জ্বালানির ব্যবহারের পাশাপাশি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে মনোযোগী হব আমরা। তবে সংস্থা হিসেবে স্রেডা এখনও খুবই নবীন। এ কাজে তাই সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।