Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:31 am

মন্দার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি অর্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:ইউরোপ ও চীনের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল চালু করাসহ বৈশ্বিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্বের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট মন্দার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক শিপিং জার্নাল লয়েড’স-এর ২০২২ সালের জরিপে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি কনটেইনার পোর্টের তালিকায় ৬৪তম অবস্থান অর্জন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। বিগত বছরের তুলনায় আরও ৩ ধাপ এগিয়ে গেছে। বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা বর্ধিতকরণ, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কর্ণফুলী ক্যাপিটাল ড্রেজিং, পাইরেসি শূন্যে পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং লালদিয়া চর অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে।

সরকারের চট্টগ্রাম বন্দরসংক্রান্ত সাম্প্রতিক এক নথি থেকে বিশ্বব্যাপী মহামন্দার মধ্যেই চট্রগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি অর্জন হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। দ্রুততম সময়ে বাণিজ্যিক পণ্য বিদেশে রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে চীনা ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ পরিচালনা চালুর ফলে পণ্য পরিবহনের হাব পোর্টগুলোর ওপর নির্ভরতা কমানোসহ পরিবহনের সময়কাল হ্রাসের মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানিকারকের খরচ হ্রাস পাবে। দুই মহাদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমাণ ও সুযোগ বেড়ে যাবে।

বৈশ্বিক মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্বের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হওয়া বিবিধ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চট্টগ্রাম বন্দর বিগত অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে ৩ শতাংশ ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশ্বের অধিকাংশ বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের মাত্রা ব্যাপকহারে হ্রাস পেলেও চট্রগ্রাম বন্দর সম্মানজনক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্লাবে অবস্থান ধরে রেখেছে। বিগত বছরে চট্টগ্রাম বন্দর ৩ দশমিক ১৪ মিলিয়ন কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।

এদিকে বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিউমুরিং ওভারফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এ ইয়ার্ড প্রায় ৯০ হাজার ৫২১ বর্গমিটারজুড়ে বিস্তৃত। ইয়ার্ডে প্রায় ৪ হাজার টিইইউস ধারণক্ষমতা সম্পন্ন কনটেইনার রাখা সম্ভব। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা সামগ্রিকভাবে ৪৯ হাজার ১১৮ টিইইউস থেকে বেড়ে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউসে উন্নীত হয়েছে। এতে বন্দরে আগমনকারী জাহাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে তাদের কনটেইনার নামিয়ে পরবর্তী গন্তব্যে যেতে পারছে। বিভিন্ন শিপিং লাইনগুলো বন্দরের ওপর কোনো ধরনের অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করতে পারছে না। সামগ্রিকভাবে পণ্য আমদানি খরচ হ্রাস পেয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক শিপিং জার্নাল লয়েড লিস্টের জরিপে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি কনটেইনার পোর্টের তালিকায় ৬৪তম অবস্থান অর্জন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর, যা গত বছর অবস্থানের তুলনায় আরও ৩ ধাপ এগিয়ে গিয়ে করোনা

পরবর্তী বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে চট্টগ্রাম বন্দর তার অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে কোস্টগার্ডের নেতৃত্ব আইএসপিএস চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুচারুরূপে পর্যবেক্ষণ করে পরিদর্শক দল তাদের গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের কাস্টমসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে পুরোনো ডিজি কার্গোগুলো বন্দর প্রাঙ্গণ থেকে অপসারণের মাধ্যমে নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা হয়েছে।

বাণিজ্যিক জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় হ্রাস করা হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রামে বন্দরে ৭০ শতাংশ কনটেইনার জাহাজ সরাসরি এসেই বার্থে অবস্থান নিতে পারছে। এছাড়া ডুয়েলটাইম ও জাহাজের গড় অবস্থান ৯ দশমিক ১৬ দিন এবং ২ দশমিক ১৩ দিনে নেমে এসেছে।