মমতায় বশে আনুন কৈশোর

অতিরিক্ত স্নেহ কিংবা মারধর। চেঁচামেচি কিংবা উদাসীনতা। বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের প্রতি অভিভাবকের এমন ভাবাবেগের ফল হিতে বিপরীত হতে পারে। এমন সময়ে তাদের শারীরিক-মানসিক পরিবর্তন সামলাতে কৌশলী হতে হয় মা-বাবাকে।
শিশুকাল পেরিয়ে কৈশোরে পা রাখে যে সন্তান তাকে কড়া শাসন কিংবা অত্যধিক স্নেহ দিয়ে আগলে রাখতে চান বেশিরভাগ অভিভাবক। বাড়ন্ত সন্তানটি তখন হয় অবাধ্য হয়ে ওঠে, না হয় তার ভেতরে জেদ চেপে বসে। হয়তো নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চায়। পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে ওঠে। ইন্টারনেটে আসক্তি জন্মায়। ধূমপান কিংবা বিপজ্জনক যৌনতায় আক্রান্ত হয়। এসব কারণে উদ্বিগ্ন থাকে মা-বাবা। ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে পড়ে কৈশোর মন ও অভিভাবক। দু’পক্ষের চাওয়ার বৈপরীত্যে অশান্তি তীব্র হয় সংসারে।
এ সময়ে সন্তান নিজেকে বড় ভাবতে শুরু করে। তার নিজস্ব ভাবনা, ধারণা তৈরি হয়। মতামত দেওয়া শুরু করে। এসব বিষয়কে অভিভাবকদের গুরুত্ব দিতে হবে। তর্ক না করে মন দিয়ে তাদের বক্তব্য শুনুন। পরিস্থিতি নম্রভাবে বোঝান। ব্যস্ততার অজুহাত না দেখিয়ে সন্তানকে নিয়মিত সময় দিন। একসঙ্গে গল্প করুন। টিভি দেখতে পারেন। নিজেদের মতামত সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। ভুলেও অন্যের সঙ্গে সন্তানের তুলনা করা ঠিক নয়। তার আত্মসম্মানে লাগে এমন কথা বলবেন না।
কিছু কেনার আগে ছেলেমেয়ের কথা শুনুন। পরিবারের সবাইকে তাতে সম্পৃক্ত করুন। যে মতামতে ভোট বেশি পড়বে তাতে সিদ্ধান্ত নিন। সপ্তাহে এক-একদিন এক-একজনের পছন্দমতো রান্না করুন।
পরিবারে গণতান্ত্রিক আবহ গড়ে তুলুন। ফলে পরিবারের প্রতি সন্তানের দরদ ও দায়বদ্ধতা বাড়বে। সে যেন একাকী নিজের জগৎ গড়ে না তোলে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। তাহলে কিছু গোপন করার প্রবণতা কমে আসবে।
অতিরিক্ত বায়না করলে কিংবা ইন্টারনেট-মোবাইল ফোনে আসক্তি অথবা মোটরসাইকেলের প্রতি আগ্রহী হলে শাসন করুন, তবে মমতা দিয়ে।
বিদ্যালয়ের পাশাপাশি মা-বাবা সন্তানকে যৌন সচেতনামূলক শিক্ষা দেবে, বিশেষজ্ঞরা এমনই মনে করেন। সাধারণত টিনএজাররা বন্ধুদের কাছ থেকে এসব বিষয়ে অনেক নেতিবাচক কথা শুনে থাকে। ফলে তারা কৌতূহলি হয়ে ওঠে।
সন্তানকে কখনও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেবেন না। মারধর করবেন না। নিজেরা কখনও সন্তানের সামনে ঝগড়া করবেন না। তাদের সামনে ধূমপান করবেন না। প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন না।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০