মসজিদ ও মন্দির পাশাপাশি নামাজ ও পূজা নির্বিঘ্নে

জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত:  বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। এই ইতিহাসের অনেক নিদর্শন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে দেশের নানা প্রান্তে। এমনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন বহন করছে লালমনিরহাট শহরের পুরানবাজার এলাকার শতবর্ষী মসজিদ ও মন্দির।

এখানে ধর্ম নিয়ে নেই কোনো হানাহানি ও মতবিরোধ। মসজিদ ও মন্দিরসংলগ্ন খোলা জায়গায় ওয়াজ মাহ্ফিল এবং জানাজার নামাজও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ঠিক তেমনই পূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মেলা বসে। কোনো বাধা-বিঘœ ছাড়াই ধর্ম পালন করা হয় এখানে। এতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে অংশ নেন। ফলে সম্প্রীতির এই স্থানটি দেখতে দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন এখানে।

জানা যায়, ১৩০২ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১৮৯৫ সালে দুর্গামন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এখানে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় পুরানবাজার এলাকাকে অনেকে কালীবাড়ী নামে অভিহিত করে থাকেন। ১৩০৭ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১৯০০ সালে এখানে স্থানীয় উদ্যোগে জনৈক আসান উল্লা দালালের তত্ত¡াবধানে মন্দিরের পাশে একটি নামাজঘর নির্মিত হয়। এই নামাজ ঘরটিই পরবর্তী সময়ে পুরানবাজার জামে মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। শুরু থেকেই সম্প্রীতির সঙ্গে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করে আসছেন দুটি সম্প্রদায়ের মানুষ।

ভোরে ফজরের সময় মোয়াজ্জিমের কণ্ঠে আজানশেষে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে চলে যাওয়ার পরে ঠিক পাশেই মন্দিরে শোনা যায় উলুধ্বনি। তাছাড়া মসজিদ ও মন্দির কমিটির সদস্যরা বসে ঠিক করে নেন কখন ও কীভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করা হবে।

পুরানবাজার জামে মসজিদের ইমাম মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মসজিদ ও মন্দির পাশাপাশি হলেও এখানে আমাদের নামাজ কিংবা ধর্মীয় উৎসবে কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। বেশ সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবেই সবকিছু সম্পন্ন হয়।

কালীবাড়ী দুর্গামন্দিরের পুরোহিত শংকর ঠাকুর জানান, শত বছরের পুরোনো এখানকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দুটি। এখানে আমরা নির্বিঘ্নে পূজাসহ হিন্দুধর্মের সব উৎসবই পালন করি। এতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে এখানে উৎসবের আয়োজন করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে এখানে পূজায় অংশ নেন।

 

লালমনিরহাট

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০