Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 2:14 pm

মসলায় উচ্চমাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে

বাংলাদেশে মসলায় উচ্চ মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। হলুদের মাননির্দেশক হিসেবে রং ও ওজন বাড়ানোর জন্য ব্যবহƒত লেড ক্রোমেট শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সমানভাবে রক্তে সিসার মাত্রা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। এক সমীক্ষা অনুসারে, কিছু পণ্যে সিসার উপস্থিতি জাতীয় সর্বোচ্চ সীমা ছাড়িয়ে ৫০০ গুণ পর্যন্ত বেশি পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিসার ভূমিকাজনিত কারণে বাংলাদেশে আইকিউ হ্রাস পাওয়ায় অর্থনৈতিক যে ক্ষতি হয়, তা দেশের জিডিপির পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশের সমান। সিসার বিষক্রিয়া শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশের সক্ষমতাকে ব্যাহত করে এবং জীবনে পাওয়া সুযোগগুলোর সর্বাধিক সুবিধা গ্রহণে তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, প্রথম দিকে অল্প কিছু লক্ষণ দেখা দিলেও সিসা নীরবে শিশুদের স্বাস্থ্য ও বিকাশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে মৃত্যুর মতো পরিণতিও ডেকে আনে। সিসার দূষণ কতটা বিস্তৃত তা জানা এবং ব্যক্তিবিশেষ ও কমিউনিটিতে এটি যে ক্ষতি সাধন করে তা বুঝতে পারা শিশুদের সুরক্ষা প্রদানে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণকে অবশ্যই অনুপ্রাণিত করবে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সিসা একটি শক্তিশালী নিউরোটক্সিন, যা শিশুদের মস্তিষ্কে অপূরণীয় ক্ষতি করে। এটি বিশেষ করে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে আনে, কারণ পুরোপুরি বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাওয়ার আগেই তাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি করে এটি, যার ফলস্বরূপ সারা জীবনের জন্য তাদের স্নায়বিক, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়।

শৈশবকালীন সিসাজনিত বিষক্রিয়া মানসিক স্বাস্থ্য ও আচরণগত সমস্যা এবং অপরাধ ও সহিংসতা বৃদ্ধির সঙ্গেও সম্পর্কিত। প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় শিশুরা পরবর্তী জীবনে কিডনি নষ্ট হওয়ার ও কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিসহ ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করে।

শৈশবকালীন সিসাজনিত বিষক্রিয়ার শিকার হওয়া শিশুদের জীবনভর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতি হয়।

ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে