মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে ভোক্তা অধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন কোরবানি ঈদ সামনে রেখে মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর  মৌলভীবাজার ও শ্যামবাজারে কাজ করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল

কারওয়ান বাজারে গরম মসলার মূল্য ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, মৌলভীবাজারের মসলা ব্যবসায়ীরা মূল্যতালিকা ঝোলান না। কোথা থেকে কত দামে এনেছেন, তাও জানাতে চান না। ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করেন। এখানে আমাদের কাজ করার  জায়গা আছে। মসলার দোকানে টেক্সটাইল কালার ব্যবহার করতেও দেখছি, ফুডগ্রেড কালার নয়।

আদার দাম প্রসঙ্গে সফিকুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামে আমরা বাজার মনিটর করেছি। ঢাকার বাজারও পর্যবেক্ষণ করছি।

সফিকুজ্জামান বলেন, গরম মসলা ও আদার ক্ষেত্রে বাজারে একটা অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। দাম বেড়ে যাচ্ছে। কোরবানিকে টার্গেট করে এটা করা হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টও তা-ই বলছে।

তিনি বলেন, আজ সোমবার থেকে সারা বাংলাদেশে মসলার বাজার, বিশেষ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এবং ঢাকার মৌলভীবাজার ও শ্যামবাজারের মসলার বাজার নজরদারিতে রাখছি। এখানে আন্ডার ইনভয়েসিং হলে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করব। এক সপ্তাহ আমি এটা অবজার্ভ করব। তারপর ডিটেইলস রিপোর্ট সরকারের কাছে দেব। ক্যাব থেকে বলা হয়েছে, সব আদা চাইনিজ আদা নামে বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামে আমাদের ভালো মানের আদা হয়, সেটা হার্ভেস্টিংয়ের আগেই কাঁচা বিক্রি করে অতি মুনাফা করবে, এটা দুই ধরনের প্রতারণা।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর শাহরিয়ার বলেন, সারা বছর মসলার বাজার স্থিতিশীল ছিল, এখন যখন ঈদ ঘনিয়ে এলো, ব্যবসায়ীরা মোচড় দিয়ে উঠেছে। ঈদের আগে কেউ কেউ বাজারে কারসাজি করার অপপ্র?য়াসে লিপ্ত আছে।

তিনি বলেন, আজ সোমবার থেকে আমাদের সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নিতে হবে। কোরবানি ঈদের ১৫ দিন আগেই যেন বাজার স্থিতিশীল থাকে। সোমবার থেকে আমাদের সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা হবে। যে প্রতিষ্ঠানে মূল্যতালিকা না টানানো হবে, এক দিনের জন্য হলেও সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করব। সেই প্রতিষ্ঠানকে শেখানোর দরকার আছে। যদি কেউ কাগজ না রাখে, সেই প্রতিষ্ঠানকে তিন দিনের জন্য বন্ধ করে যাব। যখন ধরা হয়, তখন অনেক ব্যবসায়ী মিলে হইচই করবে, এই দিন আর নেই।

‘আদাসহ অন্যান্য মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢাকায় আমাদের সব টিমকে নিয়োগ করব। এটা স্থিতিশীল করতে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে যাব। চায়না আদা এখন নেই। চায়না আদার নাম করে অন্য আদা বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে, এটাও দেখা হবে। আমাদের এবার কঠোরতা থাকবে একটু ভিন্ন রকম।’

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার বলেন, পাইকারিতে ১২৯ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে আদা বিক্রি করা হচ্ছে। পাইকারির ১২৯ টাকার আদা খুচরা বাজারে গিয়ে ১০০ টাকারও বেশি লাভ করা হচ্ছে। ২৫০-২৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা নিজেদের কমিশন এজেন্ট দাবি করেন। তারা বলেন, এই পণ্যগুলো আমাদের নয়। কমিশনের বিনিময়ে পণ্য বিক্রি করি। কিন্তু উৎপাদকের কোনো ক্যাশমেমো তারা দিতে পারেননি। মৌখিকভাবে এই মূল্য নির্ধারণ করে থাকে।

আদার নাম নিয়ে ঢাকা নিউমার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, খুচরা ও পাইকারির মধ্যে এত পার্থক্য হতে পারে না। আপনারা শুধু মার্কেটগুলো মনিটরিং করেন। মহল্লার মধ্যেও এটা হতে পারে। আমি নিজেও ৩০০ টাকা করে কিনেছি আজকে। মূল বিষয়টা খতিয়ে দেখা দরকার। আপনারা অভিযানে না গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে বাজারে যান, তাহলে মূল চিত্রটা দেখতে পারবেন। পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন দোকান হয়ে গেছে। তারা অনেকভাবেই বিক্রি করেন। আদা ৫০০ টাকা বলছে, এটি আমি কখনো শুনিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০