Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 5:38 am

মস্তিষ্কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

মানুষের মস্তিষ্কে ৮৬ বিলিয়ন কোষ থাকে। বেশিরভাগ কোষই একে অন্যের চেয়ে আলাদা। এবার আসুন আসল কথায়, প্রায় ১০ হাজার আলাদা নিউরণ বা স্নায়ুকোষ রয়েছে এখানে। ২০০৬ সালে ইউরোপের বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষায়িত মাইক্রোচিপের ধারণা দেন, যার মাধ্যমে মস্তিষ্কের নিউরণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব! তাদের দাবি ছিল এমনই।
মূলত একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত মস্তিষ্ক কোষ কীভাবে কাজ করে, তা বোঝার জন্যই তারা এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন ধারণা করা হয়েছিল, ভবিষ্যতের কম্পিউটার স্মৃতিভাণ্ডার হিসেবে মানুষের নিউরণ ব্যবহার করতে পারবে।
গত মাসে সেই সম্ভাবনার দ্বার কিছুটা হলেও খুলে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ইলেকট্রিক কার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক। তিনি এমন একটি কম্পিউটার বানানোর চেষ্টা করছেন, যা সরাসরি মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। এজন্য নিউরালিংক নামে একটি নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ‘চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণাগার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন করেছেন। প্রসঙ্গত, মহাকাশ অভিযানের স্বপ্ন নিয়ে এলন মাস্ক প্রতিষ্ঠা করেছেন স্পেসএক্স।
তার নতুন প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক ‘নিউরন তন্তু’ তৈরি করবে। এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের ভেতরে অতি ক্ষুদ্র ইলেকট্রোড বসানো সম্ভব হবে। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতা আরও উন্নত হবে। আমাদের বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে যোগ হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। অর্থাৎ মানুষের মস্তিষ্ককে জুড়ে দেওয়া যাবে কম্পিউটারের সঙ্গে। কোনো কাঠামো ছাড়াই আমাদের মস্তিষ্ক সরাসরি যন্ত্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। এটি উদ্ভাবিত হলে, আমরা একে অপরের চিন্তা-ভাবনা মস্তিষ্কে আপলোড ও ডাউনলোড করতে পারব। ফলে বেড়ে যাবে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক সামর্থ্য।
আসলে মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা সম্পর্কে সঠিক হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। কারো কারো মতে, আগের ধারণার চাইতে মানুষের মস্তিষ্ক ১০ গুণ বেশি তথ্য ধারণ করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা এক পেটাবাইট। তাই মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা থেমে নেই। ইউরোপ ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের জটিলতা ও প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা নিয়ে কাজ করে চলেছেন। এখন দেখার অপেক্ষায়, কতটা সফল হতে পারেন এলন মাস্ক।