মহামারিতে ফোরজি ফোনে শুল্ক মওকুফের অনুরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারিকালে দুই মাসের জন্য ফোরজি হ্যান্ডসেট আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তিতে শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে বা ন্যূনতম মূল্যে সংযোগসহ হ্যান্ডসেট দেওয়ার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। টেলিযোগযোগ সেবার মানোন্নয়নসহ এর ওপর আরোপিত করহার কমানোর প্রস্তাবও করেছে সংগঠনটি। গতকাল ডিআরইউ মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রস্তাবনা তুলে ধরে।

সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘দেশে ফোরজি নেটওয়ার্ক ৮০ শতাংশ থাকলেও ফোরজি ব্যাবহারকারী ডিভাইস রয়েছে ২০ শতাংশ। ভারতের জিও তাদের গ্রাহকদের নির্দিষ্ট মেয়াদে ব্যবহারের শর্তে মাত্র দেড় হাজার টাকায় ফোরজি হ্যান্ডসেট সংযোগ দিচ্ছে। এক্ষেত্রে ডিভাইসের মান ও ইন্টারনেটের গতি সম্পর্কে জিও জবাবদিহি করে। আমাদের দেশে ফোরজি হ্যান্ডসেট কিনতে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাগে। উচ্চ মূল্যে মানসম্মত ডিভাইস কেনা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। মহামারিকালে পেঁয়াজ আমদানির মতো দুই মাসের জন্য ফোরজি হ্যান্ডসেট আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফ্রি বা ন্যূনতম মূল্যে সংযোগসহ হ্যান্ডসেট দেওয়া যেতে পারে।’

বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল টেলিফোন সেট উৎপাদনের ওপর মূসক অব্যাহতি এবং সংযোজন খাতে পাঁচ শতাংশ হারে মূসক বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া স্মার্টফোন আমদানিতে প্রায় ৬০ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হয়।

মহামারিকালে টেলিযোগযোগ ও ইন্টারনেট সেবা শিক্ষা, চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন যোগাযোগের প্রায় একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় বাড়তি চাহিদার কারণে গ্রাহক ভোগান্তি বেড়েছে বলে জানিয়ে মহিউদ্দীন বলেন, ‘উচ্চ মূল্য ও ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকায় নতুন প্রজšে§র সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী অসুবিধায় রয়েছে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে দুর্বল নেটওয়ার্ক ও ডেটার উচ্চ মূল্যের কারণে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে।’

টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন না করে শুধু ডিভাইস দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হবে বলে জানিয়ে মহিউদ্দীন বলেন, ‘ইউজিসি ডিভাইস ক্রয়ে অক্ষম শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছে, তবে সড়ক তৈরি না করে গাড়ি ক্রয় করে গাড়ি চালানো যাবে না এজন্য নেটওয়ার্ক উন্নত করতে হবে।’

দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে গ্রাহক অনুপাতে পর্যাপ্ত তরঙ্গ নিশ্চিত করার প্রস্তাব দিয়ে মহিউদ্দীন বলেন, ‘সরকার তরঙ্গমূল্য কমিয়ে বা বিনা মূল্য দিয়ে অপারেটরদের সঙ্গে বিশেষ চুক্তিতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ফ্রি বা কম মূল্যে গ্রাহকদের সেবাপ্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করবে। অব্যবহƒত তরঙ্গের প্রয়োজনীয় ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলেই মোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য তরঙ্গমূল্য কমাতে পারে না। তবে অপারেটররা একসঙ্গে বেশি পরিমাণ তরঙ্গ কিনলে দাম কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে বিটিআরসি।

এ প্রসঙ্গে মহিউদ্দীন বলেন, ‘সরকার চাইলে জনগণের স্বার্থে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তরঙ্গের উচ্চ মূল্য থাকায় অপারেটরটা অল্প পরিমাণ তরঙ্গ কিনেছে। কমিশনের এ ধরনের যুক্তির সঙ্গে আমরা একমত নই।’ এছাড়া টেলিযোগযোগ সেবার ওপর আরোপিত করহার কমানোর প্রস্তাব করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। চলতি অর্থবছর মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়।

সম্পূরক শুল্ক পাঁচ শতাংশ পয়েন্ট বাড়ায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১০০ টাকা খরচ করে ৭৫ দশমিক শূন্য তিন টাকার সেবা মিলবে। ২৪ দশমিক ৯৭ টাকা পাবে সরকার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০