মাংসের দাম চড়া, স্বস্তি নেই সবজি-মাছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বাজারগুলোতে লেগেছে বৈশাখী হাওয়া। ১৫ দিন পরই বাঙালির প্রিয় উৎসব পহেলা বৈশাখ। আর বৈশাখকে কেন্দ্র করে বেড়েছে ইলিশ ও মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ইলিশের দাম ৫০০ টাকা আর গরু ও খাসির মাংসের দাম ৩০ টাকা বেড়েছে। দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে সব ধরনের চালসহ মুদিপণ্যের দাম।
প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম সাড়ে ৫০০ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি ছাড়িয়েছে ৩০০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগির কেজি পৌঁছেছে ২৫০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকার কাছাকাছি। রাজধানীর বাজারগুলোতে এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাংস। মাংসের দামের পাশাপাশি স্বস্তি নেই মাছ ও সবজিতেও। পাঙাশ ও তেলাপিয়া ছাড়া কোনো মাছের কেজি ২০০ টাকার নিচে মিলছে না। আর হাতে গোনা দু-একটি সবজি বাদে বেশিরভাগের দাম ১০০ টাকার কাছাকাছি। বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
মুরগির দামের পাশাপাশি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ইলিশের দাম। গত সপ্তাহে ৭০০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি কেজি ইলিশ ১২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা, ৮০০ গ্রামের প্রতি হালি ইলিশ চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ইলিশ ২৫০০ থেকে ৩০০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বৈশাখকে কেন্দ্র করে মানুষ মাছ-মাংস আগে কিনে সংরক্ষণ শুরু করে দিয়েছে। তাই হঠাৎ চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সরবরাহ বাড়েনি। এখন দেশি গরু ছাড়া অন্য কোনো গরু পাওয়া যায় না। ইলিশ ধরা নিষেধ থাকায় সরবরাহ কম। আবার যা পাওয়া যায় সাইজে ছোট আবার দামও বেশি।
ব্রয়লার মুরগির কেজি আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা থেকে ১৭৫ টাকা। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। আর পাকিস্তানি কক গত সপ্তাহের মতো ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গরুর মাংসের কেজি পৌঁছে গেছে সাড়ে ৫০০ টাকায়। বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৩০ থেকে ৫৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকা কেজি। এর মাধ্যমে গত এক মাসে প্রতি সপ্তাহেই গরুর মাংস দাম কিছু না কিছু বেড়েছে। মাংসের দামের পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে না ডিমের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম নতুন করে না বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে এক পিস ডিম ১০ টাকার নিচে মিলছে না। আর পাইকারিতে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের দাম। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজি। রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজির দাম এখনও কমেনি। বরবটি গত সপ্তাহের মতো ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স, কচুর লতি ও করলা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পিস। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস। আর ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। মূলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।
চড়া দামের বাজারে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হওয়া পেঁপে, টমেটো, শসা ও গাজরের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁপের দাম বেড়ে ৩০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। শসার দাম দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে টমেটো ও শসা ৩০ টাকা কেজির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছিল। আর ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তবে দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ। বাজার ভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০