অ্যালার্জি আছে বলে অনেকেই গরুর মাংস, বেগুন, ইলিশ, চিংড়ি মাছ প্রভৃতি খাবার বন্ধ করে দেন। তবে সবার কিন্তু সব খাবারে অ্যালার্জি হয় না। মাংস খেলে যদি ত্বকে র্যাশ হয়, চুলকানি হয় বা নাক বন্ধ হয়ে পানি পড়ে, তাহলে বুঝবেন মাংসে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে। অনেকেরই মাংস খেলে, বিশেষ করে গরুর মাংস খেলে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। যেকোনো বয়সেই এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার নির্দিষ্ট প্রাণীর মাংসে অ্যালার্জি থাকলে পরবর্তী সময়ে অন্য প্রাণীর মাংসেও অ্যালার্জি হতে পারে।
উপসর্গ: কোনো নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার পর প্রতিবারই যদি ত্বকে র্যাশ বা ফুসকুড়ি হয়। পেটে ব্যথা ও বদহজম, বমি বমি ভাব বা বমি অথবা ডায়রিয়া হয়।
নাক বন্ধ, মাত্রাতিরিক্ত হাঁচি, মাথাব্যথা, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। মাংসে অ্যালার্জি আছেÑএমন ব্যক্তি প্রথমবার মাংস খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা একে ক্ষতিকর পদার্থ হিসেবে ধরে নেয় এবং এর বিরুদ্ধে ইমিউনোগ্লোবিন (ওমঊ) নামের নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি দেহের ইমিউন কোষের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। ফলে এরপর যতবারই মাংস খাওয়া হয়, ততবারই এই ইমিউনোগ্লোবিন প্রচুর পরিমাণে হিস্টামিন ও অন্যান্য রাসায়নিক রক্তে ছড়িয়ে দেয়। এর প্রভাবে দেহে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এ সময় আপনার অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বাড়লে নিজেকে প্রশ্ন করুন। ১. কোনো প্রাণীর মাংস খেলে অ্যালার্জি হচ্ছে; ২. কী কী লক্ষণ দেখা যাচ্ছে; ৩. লক্ষণগুলো কত সময় স্থায়ী হচ্ছে; ৪. কত দিন ধরে লক্ষণগুলো দেখা যাচ্ছে; এসব প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ: অ্যালার্জি প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে ওই নির্দিষ্ট প্রাণীর মাংস পরিহার করা। অ্যালার্জির মাত্রা কম হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ মাংস মাঝে মধ্যে খেতে পারেন। তবে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। মাংস খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। এতে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সাধারণত একই ব্যক্তির একাধিক খাবারে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। তাই নির্দিষ্ট করে শনাক্ত করতে প্রায়ই অসুবিধা হয়। এ জন্য একটি ‘ফুড ডায়েরি’ করতে পারেন।
ডা. জাহেদ পারভেজ
সহকারী অধ্যাপক, ত্বক ও যৌনরোগ বিভাগ
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ