শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট একসঙ্গে ১ হাজার ৮০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। খবর: রয়টার্স।
কভিডকালে আমেরিকার অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সংসার চালাতে অল্প বেতনের কাজেও নিযুক্ত হয়েছেন। সেই অবস্থা কাটিয়ে চাঙ্গা হচ্ছে চাকরির বাজার। এর মধ্যে ফের আরও একবার বড় ধাক্কা দিল মাইক্রোসফট।
জানা গেছে, ৩০ জুন অর্থবছরের হিসাব শেষ হয়েছে। এরপর কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে। তবে মাইক্রোসফটের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত নানা পদে অধিক সংখ্যক কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, একসঙ্গে ১ হাজার ৮০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে মোট কর্মচারীর সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। সে তুলনায় ১ শতাংশের কম কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। তাই ১ লাখ ৮০ হাজার কর্মীর এই বিশাল বড় সংস্থায় ১ শতাংশের কম কর্মী ছাঁটাই হওয়ায়, সংস্থার ওপর এর বিশেষ প্রভাব পড়বে না বলেই জানানো হয়েছে। অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো তাদের বাণিজ্যিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কীÑএবং তা পূরণ করতে গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মাইক্রোসফট আরও জানায়, কর্মী ছাঁটাই সত্ত্বেও তারা ব্যবসায় বিনিয়োগ করা এবং আগামী বছরগুলোয় সামগ্রিকভাবে আরও কর্মী বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই একটি মেমোতে কর্মীদের বলেন, কোম্পানি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুযোগগুলোয় সমর্থন করবে এবং ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রযুক্তিগত বিভাগে নিয়োগের ওপর বেশি ফোকাস করবে। আমাদের সংস্থা চলতি বছর ও ২০২৩ সালে প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিয়োগে মনোযোগ দেবে। এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আরও বেশি উদ্যোগ নিতে হবে, আরও বেশি জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
ইতোমধ্যে কর্মহীন হয়েছেন নানা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানের ১২ হাজারের বেশি কর্মী। আমেরিকায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আর্থিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে না পারলে চলতি বছর ৫০ হাজারের বেশি কর্মী বেকার হবেন। কভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে বিগত দুই বছরে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যে যে চরম ক্ষতি হয়েছে, সে কারণে আর্থিক মন্দায় পড়েছে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ৪ জুলাইয়ের (আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস) ছুটির পর নতুন অর্থবছরে একাধিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবেই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণাও করা হতো। সম্প্রতি ইলন মাস্ক থেকে শুরু করে বিল গেটসÑসবাই আসন্ন আর্থিক মন্দা নিয়ে সতর্ক করেন। ঐতিহাসিকভাবে গুগল প্রযুক্তি খাতের অর্থনৈতিক ঘাটতি থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছে। ইন্টারনেট জায়ান্টটি এক দশকের বেশি আগে আর্থিক সংকটের পর নিয়োগ বিরতি দিয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে নিয়মিতভাবে তার প্রধান বিজ্ঞাপন ব্যবসার পাশাপাশি স্মার্টফোন, স্বচালিত গাড়ি ও স্মার্ট ডিভাইস ক্ষেত্রগুলোর জন্য নতুন কর্মীদের যুক্ত করেছে। চলতি বছর ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৬৪ হাজার কর্মী নিয়োগ দেয়া গুগল প্যারেন্ট অ্যালফাবেট সাম্প্রতিক বছরগুলোয় গুগলের ক্লাউড বিভাগ ও হার্ডওয়্যারের মতো নতুন ক্ষেত্রগুলোর জন্য প্রাথমিকভাবে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে মাইক্রোসফট একটি ই-মেইল বিবৃতিতে জানায়, আজ আমরা অল্পসংখ্যক কর্মী বাদ দিয়েছি। সব কোম্পানির মতো আমরা নিয়মিতভাবে আমাদের ব্যবসার অগ্রাধিকারগুলো মূল্যায়ন করি এবং সেই অনুযায়ী কাঠামোগত পরিবর্তন করছি। আমরা আমাদের ব্যবসায় বিনিয়োগ চালিয়ে যাব এবং সামনের বছরে সামগ্রিকভাবে আরও কর্মী নিয়োগ করা হবে। অ্যালফাবেট ইনকরপোরেটেডের গুগল সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার মুখে বছরের বাকি সময়ের জন্য নিয়োগ কমানোর পরিকল্পনা করেছে বলে ই-মেইলে উল্লেখ করা হয়।