নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯-এর পর বিশ্বের অনেক দেশে ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। বাংলাদেশেও ভাইরাসটি প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। মাঙ্কিপক্স ঠেকাতে সমকামী পুরুষদের যৌনসঙ্গী কমানোর পরামর্শও দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিএইচও) মহাসচিব তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। বলা হচ্ছে, ২৬ শতাংশ রোগীর মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে এইচআইভি-পজিটিভ ধরা পড়ে।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে দেশবাসীকে আগাম সতর্ক করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মাঙ্কিপক্স সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়, যার মধ্যে শ্লেষ্মা ঝিল্লি ও ত্বকের ক্ষতের মাধ্যমে বা দূষিত বস্তুর সংস্পর্শে আসা অন্যতম। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের ফোঁটা বা ড্রপলেট দ্বারাও সংক্রমিত হতে পারে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বল্প দূরত্বে ও দীর্ঘক্ষণ সান্নিধ্যে থাকলে এবং আক্রান্ত অন্য ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগ হলে যে কেউ এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বেন।
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের প্রায় ১৭ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের। এই অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্সকে শনাক্তযোগ্য ও বর্ধনশীল ব্যাধি হিসেবে বর্ণনা করে। গত ২৩ জুলাই মাঙ্কিপক্স নিয়ে ডব্লিএইচও সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা জারি করে।
উপাচার্য বলেন, মাঙ্কিপক্স একটি ডিএনএ ভাইরাস। কাউপক্স, ভ্যাক্সিনিয়া ও ভ্যারিওলা (স্ম্যালপক্স) এই গ্রুপের ভাইরাস। এটি একটি জুনোটিক ভাইরাস, যার প্রাথমিক সংক্রমণ সংক্রমিত প্রাণীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে বা সম্ভবত তাদের (জংলি কুকুর, ইঁদুর, খরগোশ, কাঠবিড়ালি, বানর, সজারু প্রভৃতি) অপর্যাপ্তভাবে রান্না করা মাংস খাওয়ার মাধ্যমে ঘটে বলে বিশ্বাস করা হয়।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, প্রতিদিনই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগীর খবর আসছে। গত শুক্রবার ব্রাজিল ও স্পেনে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বলা মুশকিল। তাই আতঙ্কিত না হয়ে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। করোনা চীন হয়ে ইতালি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে, মাঙ্কিপক্স যে একইভাবে আসবে না, তা নিশ্চিত নয়। তাই সময় থাকতে সচেতন হতে হবে।
শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে গুটিবসন্তের টিকা ৮৫ ভাগ সুরক্ষা দেয়। কিন্তু ১৯৮১ সালের পর বাংলাদেশে এই টিকা দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। এখন ভাইরাসটির প্রকোপ যদি বেড়ে যায়, প্রয়োজনে আবার সেই টিকা প্রয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে যাদের বাসায় পোষা প্রাণী রয়েছে, তাদের একটু সচেতন হতে হবে। কেননা এটি প্রাণী থেকে প্রাণী এবং সেখান থেকে মানুষকে সংক্রমিত করে।