মাঙ্কিপক্স মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি

বিশ্বে দ্রুতগতিতে মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স ছড়িয়ে পড়ায় দেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি এবং এ নিয়ে হটলাইন চালু করা হয়েছে। গতকাল শনিবার পৃথকভাবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাঙ্কিপক্সের বিষয়ে এয়ারলাইনসগুলোকে সতর্ক থাকতে। মাঙ্কিপক্স লক্ষণযুক্ত কোনো যাত্রী থাকলে দ্রুত তা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে আসার ২১ দিনের মধ্যে যাত্রীদের মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো দেখা দিলে ১০৬৫৫ নম্বরে কল করতেও অনুরোধ করা হয়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মাঙ্কিপক্স নিয়ে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সতর্কতার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য সতর্কতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় প্রশংসার দাবি রাখে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য বিভাগ এরই মধ্যে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের সর্বাত্মক সহায়তায় কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিমানবন্দর দিয়ে আগত যাত্রীদের তাপমাত্রা থার্মাল স্ক্যানার আর্চওয়ে দ্বারা স্ক্রিন করছে। প্রয়োজন হলে লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক রোগ হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে পাঠানো হবে।

কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, কভিডকালে আমাদের নেয়া ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও অসাধু ও সুযোগসন্ধানীদের যোগসাজশে অনেক ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি সংঘটিত হয়। রোগ নির্ণয়ে ভুয়া সনদপত্র নিয়ে বিদেশেও আমার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
যেসব দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রে টিকা দেয়া থাকলেও মাঙ্কিপক্স নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিশ্চিত করা এবং দেশে প্রবেশের সময় স্ক্রিনিং জোরদার করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় এখনই সতর্ক হলে দেশে সংক্রমণ বিপজ্জনক পর্যায়ে যাবে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নাগরিকদেরও নির্দেশনা শতভাগ মেনে চলতে হবে। কভিড আমাদের দেশে সেভাবে প্রাণঘাতী হলেও সেটির অভিঘাতে আমাদের অর্থনীতি ও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই মাঙ্কিপক্স মোকাবিলার স্বাস্থ্যবিধি নিজ উদ্যোগেই জেনে নিতে হবে আমাদের। মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত দেশ বা ব্যক্তির সংস্পর্শের কারণে বাংলাদেশে আসা দেশি বা বিদেশি ব্যক্তির মাধ্যমে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।

রোগটির বিভিন্ন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ঘেমে যাওয়া, পিঠে ব্যথা, মাংসপেশির টান ও অবসাদ। প্রথম পর্যায়ে রোগীর জ্বর আসে, পাশাপাশি শরীরে দেখা দেয় ফোসকা এবং অধিকাংশ ঘটনায় শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, স্মলপক্স বা জলবসন্তের জন্য ব্যবহƒত টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর।

লোকসমাগম ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে স্থানীয় প্রশাসন জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। নতুন করে কোনো অভিঘাত আমাদের অর্থনীতি, শিক্ষা ও উন্নয়নকে যেন বিপর্যস্ত করতে না পারে, সেজন্য আমাদের বিগত সময়ের সীমাবদ্ধতা ও অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণেই আমাদের দেশে কভিডের সংক্রমণ তত গুরুতর হয়নি। বৃহত্তর জাতীয় প্রয়োজনে ও দুর্যোগে আমরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ ও দায়িত্বশীল ছিলাম। মাঙ্কিপক্স সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলায়ও সফল হবো বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০