রফিক মজিদ, শেরপুর : মাটি কাটার কাজ করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়ে ডাক্তার বানিয়ে জয়িতা পুরস্কার পেলেন ফরিদা বেগম নামে এক মা। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ এবং বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে জয়িতা পুরস্কার অনুষ্ঠানে সফল জননী ক্যাটাগরিতে ফরিদা বেগম এ সম্মাননা ও পুরস্কার গ্রহন করেন।
ফরিদা বেগমের বাড়ি সদর উপজেলার চরপক্ষীমারি ইউনিয়নের দিকপাড়া গ্রামে। তার স্বামী হারেজ আলী এক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে পরায় সংসারের দায়িত্ব বুঝে নেয় স্ত্রী ফরিদা বেগম। এদিকে স্বামীর চিকিৎসা ব্যায়, আর অন্যদিকে সংসারের খরচ। আর তখন সন্তানের পড়াশোনা চালানো যেন বিলাসিতা। তাদের মেধাবী ছেলের অর্থাভাবে যখন পড়াশোনা বন্ধের পথে, তখন সমাজের বিভিন্ন মানুষের কাছে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজেও মাথায় তুলে নেয় মাটি কাটার টুকড়ি বা খাঁচা। শুরু হয় ফরিদার নতুন করে জীবন সংগ্রাম। এভাবে দিন মজুরের কাজ করে স্বামীর চিকিৎসার পাশপাশি ছেলে কাজলের লেখা পড়ার খরচ যুগিয়ে এক পর্যায় ছেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। দীর্ঘ পড়াশোনা শেষ করে চলতি বছর কাজল বিসিএস পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়। এখন শুধু পোষ্টিং এর অপেক্ষায় রয়েছে ডা. কাজল।
পুরস্কার বিতরণী সভায় জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হান্নান, পিপি চন্দন কুমার পাল, পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন, জেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছানোয়ার হাসেন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। জেলা পর্যায়ে এবারের জয়িতা পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে অন্যান্যরা হলো, অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী আফরোজা আক্তার সুমি, শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী শ্যামা রাকসাম, নির্যাতনকারী বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী আবিদা সুলতানা আল্পনা এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় তৃতীয় লিঙ্গের নিশি সরকার।