মাতারবাড়ী বন্দর হবে এশিয়ার হাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে বন্দরের সক্ষমতা ৩-৪ গুণ বাড়বে। আর এ বন্দর চালু হলে প্রতিবেশী বন্দরগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি গভীরতার জাহাজ প্রবেশ করবে, যা আমাদের জন্য কলম্বো, পোর্ট কেলাংসহ অন্যান্য বন্দরের বিকল্প হবে। এতে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে সময় ও অর্থ ব্যয় কমবে।

গতকাল বন্দর দিবস উপলক্ষে শহিদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী মিলনায়তনে বন্দরের ১৩৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এমন মন্তব্য করেন।

তিনি জানান, গত ৩০ মার্চ মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের ২৮৩ দশমিক ২৭ একর জমি কক্সবাজার জেলা প্রশাসন বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে। বন্দর নির্মাণকাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগের লক্ষ্যে সহসা দরপত্র আহ্বান করা হবে। মাতারবাড়ী টার্মিনাল হলে ১৬ মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্র বাণিজ্যে নতুন অধ্যায়ের শুভ সূচনা হবে। এছাড়া বে টার্মিনাল প্রকল্পাধীন ৬৭ একর ব্যক্তি মালিকানার জমির দলিল ২০২১ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে বন্দরকে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আরও ৮০৩ একর জমি প্রতীকী মূল্যে বন্দরের অনুকূলে বরাদ্দ দিতে গত বৃহস্পতিবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে দেড় হাজার মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল, ১ হাজার ২২৫ মিটার ও ৮০০ দীর্ঘ ২টি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপের পথে সরাসরি শিপিং সার্ভিস চালু আরএমজি পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে সমুদ্রপথে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে। ‘এমভি সোঙ্গা চিতা’ ৯৫২ কনটেইনার পণ্য নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বন্দর ছেড়েছিল। চট্টগ্রাম থেকে ইউএসএ রুটেও সরাসরি জাহাজ চলাচলের সুযোগ রয়েছে। আর এখন স্পেন, নেদারল্যান্ডস, দুবাইসহ অন্যান্য দেশগুলো আগ্রহ দেখাচ্ছে।

চলতি বছরে সাড়ে ৪ লাখ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) নির্মাণের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দরের ১ হাজার ২২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ৬০০ মিটার জেটিতে একসঙ্গে ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের তিনটি কনটেইনার জাহাজ ও ২২০ মিটার লম্বা ডলফিন জেটিতে একটি তেলবাহী জাহাজ ভেড়ানো যাবে। আগামী জুলাইতে পিসিটির কার্যক্রম শুরু হবে আশা করি। এছাড়া পোর্ট লিমিট ৭ নটিক্যাল মাইল থেকে ৫০ নটিক্যাল মাইলে উন্নীত করা হয়েছে। পোর্ট লজিস্টিক সক্ষমতা বাড়াতে কান্ডারি ৬ ও ১২  নামের ২টি টাগবোট, দুটি মুরিং লঞ্চ, দুটি সাইট স্ক্যান সোনার, দুটি ইকো সাউন্ডার, একটি সমুদ্রগামী হারবার টাগবোট সংগ্রহ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ২০২১ সালে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইইউস, প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৬৬ লাখ টন, প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৩ শতাংশ। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪ হাজার ২০৯টি, প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ। এ অর্জন বন্দরের ৩০ বছর মেয়াদি প্রক্ষেপণ ছাড়িয়ে গেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য (অর্থ) কামরুল আমিন, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রগমান, সব বিভাগীয় প্রধান ও সিবিএ নেতারা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০