নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের এক ‘মাদক কারবারির’ সাড়ে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার নাম জসীম উদ্দিন। সম্পদ বিবরণী যাচাই শেষে তার এসব সম্পদ পাওয়া গেছে। তিনি ৯১ লাখ ৩০ হাজার টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্যও গোপন করেছেন। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক মামলাটি দায়ের করেছেন।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক অভিযোগ ছিল তিনি মাদক বিক্রি করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অনুসন্ধান শেষে তার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ১৬ জুন কমিশনের অনুমোদনের পর মামলাটি দায়ের করা হয়। তবে, মাদকের বিষয়টি দুদকের তফসিলভুক্ত নয় বলে সেই বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়নি। শুধু অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি মাছ ব্যবসায়ী। সমুদ্রে মাছ ধরেন। তিনটি সাম্পান নৌকা রয়েছে। কিন্তু, মাছ ধরার কোনো লাইসেন্স তিনি দেখাতে পারেননি। নৌকার কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে সাগরে ট্রলার দিয়ে মাছ ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা কারবারির অভিযোগ রয়েছে। জসীম উদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অনুসন্ধানকালে জসীম উদ্দিনের নামে ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ২০১ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। একই সময়ে তিনি ৪৯ লাখ টাকা পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য খরচ করেছেন। ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ২০১ টাকা। এসব সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া গেছে ১ কোটি ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তার অর্জিত সম্পদ হতে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ পাওয়া যায় ৩ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার ২০১ টাকা। এছাড়া দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৭৬ লাখ ৮ হাজার ৮৫৪ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১৫ লাখ ২১ হাজার ৩৪৭ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৯১ লাখ ৩০ হাজার ২০১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৯১ লাখ ৩০ হাজার ২০১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেন। ৩ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার ২০১ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অর্জন করে ভোগ দখলে রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। মামলা তদন্তকালে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাও আমলে নেয়া হবে।
২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর জসীম উদ্দিনের নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস পাঠানো হয়। তিনি ৯ ডিসেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।