মানব ইতিহাসে প্রাণঘাতী ২৫

রতন কুমার দাস: একসঙ্গে অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এমন রোগের সংখ্যা কম নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ২৫টি রোগের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টিইডি ম্যাগাজিন। আজ থাকছে ১৪তম প্রাণঘাতী রোগ ধনুষ্টংকার বিষয়ে।

ধনুষ্টংকার

আঠারো শতকের মাঝামাঝিতে প্রতি লাখে প্রায় ২০৫ জন ধনুষ্টংকারে আক্রান্ত হতেন। ১৯ শতকে এই সংখ্যা নেমে আসে ১৯-এ। রোগীর হার এত দ্রুত কমে আসার পেছনে আর্থার নিকোলিয়ারের অবদান রয়েছে। এই জার্মান চিকিৎসক ১৮৮৪ সালে রোগটি সম্পর্কে ধারণা দেন। বলা যায়, তিনিই রোগটি আবিষ্কার করেন এবং এর উপশমে নানা পদক্ষেপ নেন। ফলে কমে আসে মৃত্যুহার। ১৯৩৮ সালে মাত্র ৩৫ রোগী পাওয়া যায় মার্কিন মুলুকে।

সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উন্নত বিশ্বের দেশগুলো থেকে রোগটি নির্মূল হলেও এর প্রকোপ দেখা দেয় গরিব দেশগুলোয়। তবে বিশ্বের প্রায় সব দেশে আজও নিতে হয় এর প্রতিষেধক।

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় নবজাতকের ধনুষ্টংকার শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ। এ রোগে আক্রান্ত হলে জম্মের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন শিশু স্বাভাবিকভাবে কাঁদতে পারে। বুকের দুধ টেনে খেতে পারে। তিন থেকে ২৮ দিনের মধ্যে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে, বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। তার মুখ ও চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। জোরে কাঁদতে পারে না। খিঁচুনি হতে পারে। শরীর পেছনের দিকে ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যায়।

গর্ভবতী ও সন্তান ধারণক্ষম সব নারীকে পাঁচ ডোজ টিটি টিকা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দিয়ে নবজাতকের ধনুষ্টংকার রোধ করা যায়। এছাড়া নিরাপদ প্রসব ও নাভী কাটার জন্য জীবাণুমুক্ত বেøড ব্যবহার করা উচিত বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে আমাদের দেশে হুপিংকাশি ও ডিপথেরিয়ার সঙ্গে ধনুষ্টংকারের ডিপিটি টিকা দেওয়া হয়। তিনটি ডোজে এক মাসের ব্যবধানে টিকাটি দেওয়া হয়। সাধারণত প্রথম ডোজটি দেওয়া হয় শিশুর দেড় মাস বয়সে। পরেরটি আড়াই মাস ও শেষেরটি তিন মাস বয়সে। এই তিন ডোজের সঙ্গে প্রতিবার দুই ফোঁটা করে পোলিও টিকাও খাওয়ানো হয় শিশুকে।

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০