এক সঙ্গে অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছেÑএমন রোগের সংখ্যা কম নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ২৫টি রোগের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টিইডি ম্যাগাজিন। আজ থাকছে ২৩তম প্রাণঘাতী রোগ ইয়েলো ফিভার বিষয়ে
ইয়েলো ফিভার
স্ত্রী মশার কামড়ে এ রোগ ছড়ায়। আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় সব দেশে এর প্রাদুর্ভাব রয়েছে। সপ্তদশ শতাব্দীতে দাস ব্যবসার কারণে আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশেও এটি মহামারির রূপ নেয়। ১৬৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম দেখা দেয় রোগটি। সর্বশেষ ১৭৯৩ সালে দেশটির পাঁচ হাজার মানুষ এ রোগে ভুগে মারা যায়। গত শতাব্দীর ৮০’র দশক পর্যন্ত আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার লাখ লাখ মানুষ এ রোগের কারণে মৃত্যুবরণ করে। মানুষের পাশাপাশি বানরও আক্রান্ত হয় রোগটিতে।
‘ইয়েলো ফিভার ভাইরাস’ নামে পরিচিত এ রোগ। এডিস ইজিপ্টি প্রজাতির মশা এ ভাইরাসের বাহক। সাধারণত তীব্র জ্বরের সঙ্গে মাংসপেশিতে ব্যথা, শরীর শীতল হয়ে যাওয়া, ক্ষুধাহীনতা, মাথাব্যথা, রক্তক্ষরণ প্রভৃতি এ রোগের লক্ষণ। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন আক্রান্ত ব্যক্তির। অন্যথায় এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে রোগাক্রান্ত ব্যক্তি মারা যেতে পারে।
উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়। কেননা এর সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। ইয়েলো ফিভার প্রতিরোধের সহজ উপায় টিকা নেওয়া ও মশা নিয়ন্ত্রণ।
টিকা আবিষ্কারের পর এর প্রকোপ কিছুটা কমে। পুনরায় ৮০’র দশক থেকে আক্রান্ত হতে থাকে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। জলবায়ু পরিবর্তন, শহরমুখো হওয়ার প্রবণতা, টিকা সরবরাহ না থাকা প্রভৃতি বিষয় এজন্য দায়ী। প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। এ বছরও মহাদেশ দুটির কয়েকটি দেশে রোগটি আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। প্রাণও হারিয়েছে অনেকে। এসব দেশে ভ্রমণের আগে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেয় অন্য সব দেশের সরকার।
Add Comment