Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 3:19 pm

মানব ইতিহাসে প্রাণঘাতী ২৫

একসঙ্গে অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এমন রোগের সংখ্যা কম নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ২৫টি রোগের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টিইডি ম্যাগাজিন। আজ থাকছে ২২তম প্রাণঘাতী রোগ যক্ষ্মা বিষয়ে

যক্ষ্মা

যার হয় যক্ষ্মা, তার আছে রক্ষা। আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার কারণে যক্ষ্মা থেকে রক্ষা পেলেও অতীতের মতো এখনও বিশ্বের অন্যতম বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা এটি।

ধারণা করা হয়, প্রস্তর যুগেও যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব ছিল। প্রাচীন মিসর, ভারত ও চীনে রোগটি ছিল বলে মত দিয়েছেন অনেক ইতিহাসবিদ। মিসরের অনেক মমির মেরুদণ্ডে যক্ষ্মা ছিলÑবলেছেন প্রতœতত্ত্ববিদরা। সপ্তদশ শতাব্দীতে নেদারল্যান্ডসের ফ্রান্সিসকাস সিলভিয়াস রোগটির নাম রাখেন ‘টিউবারসেল’। ১৮৩৯ সালে নাম রাখা হয় ‘টিউবারকিউলোসিস’। আমাদের দেশে সংক্ষেপে টিবি বা যক্ষ্মা নামে পরিচিত।

১৮ শতকে পশ্চিম ইউরোপে প্রতি লাখে ৯০০ রোগী মারা যেত এ রোগে। জার্মান চিকিৎসাবিদ রবার্ট কচ ১৮৮২ সালে যক্ষ্মার জীবাণু আবিষ্কার করেন। বিসিজি টিকা আবিষ্কার হয় ১৯২১ সালে। এরপরও প্রায় ২০ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে যক্ষ্মার কারণে। বিংশ শতাব্দীতে এ রোগের কারণেই বেশি মানুষ মারা যায় যুক্তরাষ্ট্রে। জন কিটস, পার্সি বিশি শেলি, রবার্ট লুই স্টিভেনসন, এমিলি ব্রন্তে, এডগার এলান পো, নিকোলো পেগাগিনি, ফ্রেডেরিক চোপিন-এর মতো প্রখ্যাত ব্যক্তিরা এ রোগের কারণে মারা যান।

প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় এক কোটি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। মারা যায় অনেকে। যক্ষ্মায় ভুগে মৃত্যুর পেছনে অবহেলা ও অসচেতনতাই দায়ী। পৃথিবী থেকে যক্ষ্মা নির্মূলে সচেষ্ট রয়েছে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও স্টপ টিবি পার্টনারশিপ। এ সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে বিশ্বের সব দেশের সরকার ও স্বাস্থ্য সংগঠন। বর্তমানে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।

২০১৫ সালের এক হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ৪০২ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত। এ রোগে ভুগে প্রতি লাখে প্রায় ৫০ জন মারা যান। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অপুষ্টি প্রভৃতি এজন্য দায়ী।