একসঙ্গে অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, এমন রোগের সংখ্যা কম নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ২৫টি রোগের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টিইডি ম্যাগাজিন। আজ থাকছে ২০তম প্রাণঘাতী রোগ ফুসফুসের ক্যানসার বিষয়ে
১৭ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ফুসফুস ক্যানসার সম্পর্কে ধারণা পায় বিশ্ব। ১৭৬১ সালে রোগটি চিহ্নিত করেন বিশেষজ্ঞরা। ১৮১০ সালের মধ্যে রোগটির অনেক বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেন চিকিৎসাবিদরা। ১৮৭৬ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের খনি শ্রমিকদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। তখন অনেক শ্রমিক ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯২৯ সালে জার্মান চিকিৎসক ফ্রিটজ লিখিন্ট ধূমপান ও ফুসফুস ক্যানসারের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পান।
বর্তমানে প্রতিবছর এক দশমিক ছয় মিলিয়ন মানুষ ফুসফুস ক্যানসারের কারণে প্রাণ হারান।
মানবদেহের অন্য অঙ্গের তুলনায় ফুসফুসে ক্যানসার হওয়ার হার তুলনামূলক বেশি। ধুলাবালি, বায়ুদূষণ ও বংশগত কারণ ছাড়া ফুসফুস ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক গ্রহণ। একজন ধূমপায়ী শুধু নিজের ক্ষতি করেন না, পরিবার ও কর্মক্ষেত্রেও বিপর্যয় ডেকে আনেন। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন ধূমপায়ী তার পরিবার ও কর্মক্ষেত্রের ২৫ ভাগ মানুষের মধ্যে ফুসফুস ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেন। অর্থাৎ পরোক্ষ ধূমপানও এ অসুখের জন্য দায়ী।
ফুসফুস ক্যানসারের কয়েকটি লক্ষণের মধ্যে রয়েছে কাশি ও তার সঙ্গে রক্ত ঝরা, কফ, বুকব্যথা, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, আঙ্গুল ফুলে যাওয়া, বাত, ওজন কমে যাওয়া, গলার স্বর ভেঙে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা প্রভৃতি। টিউমারের আকার ছোট হলে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। টিউমারের পরিমাপ বড় হলে লক্ষণ দেখা যায়।
জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগই ফুসফুস সংক্রমণে ভোগেন। এ ধরনের রোগীর মধ্যে ২৮ ভাগ পুরুষ। নারী ও পুরুষ মিলিয়ে ফুসফুস ক্যানসারে ভোগা রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৮ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুযায়ী, তামাকের কারণে বিশ্বে প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যান। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে প্রতি বছর তামাকের কারণে মারা যাবে এক কোটি মানুষ, যার ৭০ লাখই বাংলাদেশের মতো অনুন্নত দেশের নাগরিক।
হ সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
Add Comment