মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দিন

 

স্বাস্থ্য মানবসম্পদ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আমাদের সংবিধানের একাধিক অনুচ্ছেদে চিকিৎসাসেবা, জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ সনদে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে কয়েকটি অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে। এগুলোর উল্লেখযোগ্য হলো ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে একটি ইউনিক হেলথ আইডি প্রদান এবং হাসপাতাল অটোমেশন ব্যবস্থাপনা চালু করা হবে। সব নাগরিককে একই রকম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করা এবং আন্তর্জাতিক মানের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন করা হবে। এ ধরনের ১০টি উদ্যোগের কথা উল্লেখ রয়েছে ইশতেহারে। এ আগে ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবার প্রসারে বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

এটি ঠিক, আমাদের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এখনও এ ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা সরকারের সাফল্যকে ম্লান করতে পারে। বর্তমান সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠাকে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দাবি করলেও, এখনও বিপুলসংখ্যক মানুষ এর বাইরে রয়েছেন।

গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘জনবল সংকটে উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী’ শীর্ষক প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের সীমাবদ্ধতাই উঠে এসেছে। কর্মস্থলে না থাকায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার সিলেটের জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমি কোনো মিডিয়ায় এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে নেতিবাচক খবর দেখতে চাই না। স্বাস্থ্যকেন্দ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য। কাজেই মানুষ যেন সঠিক সেবা পায়, রোগীরা যেন অসম্মানিত না হয়, সেটি সবার আগে সবাইকেই খেয়াল করতে হবে।

মন্ত্রীর বক্তব্যে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীল হবেন বলেই আমরা আশা করি। মনে রাখতে হবে, সরকারি হাসপাতালগুলো দেশের দরিদ্র মানুষের ভরসা। যে ২২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে, তাদের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেয়া সম্ভব নয়।

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের উপযোগী স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থা, ই-গভর্ন্যান্স, ই-হেলথ ও টেলিমেডিসিন সেবা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে, তখন প্রত্যন্ত এলাকার হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

আমরা মনে করি, সরকারি হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসকসহ পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করলে সব নাগরিকের জন্য মানসম্মত সেবাদান নিশ্চিত করা সম্ভব।  তখন জনসাধারণ, বিশেষ করে দরিদ্র ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীও মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা পাবে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০