মানসিক রোগ ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম

স্মার্টফোনের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। শুধু তা-ই নয়, মানুষ স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। সারাক্ষণ ফোনে এসএমএস, ফেসবুক আর কথা। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ব্যবহারকারীরা অজান্তে মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
অনেকে মনে করেন, ফোনে রিং হচ্ছে, আদতে তার ফোনে কোনো কল আসেনি। আবার দেখা যায়, কাজের চাপে হঠাৎ মনে হয় ফোনটা মনে হয় বেজে উঠল। কাজ ছেড়ে ফোনটা বের করে দেখলেন, কিছুই আসেনি। না কোনো ফোন, না কোনো নোটিফিকেশন! এটা নেহাতই মনের ভুল, যা নিজের কাছেও খুব বিরক্ত লাগে। এমন ঘটনা অনেকের বেলায় ঘটছে। এমনটা হওয়ার কারণ হচ্ছে ‘ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম’। এটি এক ধরনের মানসিক রোগ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশেরও বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী এমন বিভ্রান্তির শিকার। কোনো কল বা নোটিফিকেশন ফোনে না এলেও মনে হয় যেন ফোনটা কেঁপে উঠল! এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা এটিকে প্রযুক্তিগত মানসিক রোগ বলে ধারণা করেছেন। এক্ষেত্রে গবেষকদের ব্যাখ্যা হলো, দিনের বেশিরভাগ সময়ে স্মার্টফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে ব্যস্ত থাকার ফলে এমনটি ঘটছে। তাছাড়া কিছুক্ষণ পরপর নেটিফিকেশন ঢুকতেই থাকে, যাতে কোনো কিছু মিস না হয়ে যায়। ফলে এ মানসিক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
মূলত তিন ধরনের হ্যালুসিনেশন বা ভ্রম এ ‘ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম’-এর জন্য দায়ী। ট্যাকটাইল হ্যালুসিনেশন, রিফ্লেক্স হ্যালুসিনেশন আর ফাংশনাল হ্যালুসিনেশন। এর মধ্যে ট্যাকটাইল হ্যালুসিনেশন হলো স্পর্শগত বিভ্রান্তি।
বর্তমানে মোবাইল ফোন ছাড়া এক মুহূর্তও চলা খুব মুশকিল! তাই বলে, ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোমের মতো সমস্যাকে বাড়তে দেওয়া উচিত নয়। ফোনের পেছনে অতিরিক্ত সময় না দিয়ে অন্য কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। এ বিষয়ে গবেষকরা কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন।
# সবসময় ফোনের কাছে না থেকে প্রকৃতির কাছাকাছি কোনো জায়গা থেকে ঘুরে আসুন। যেমন বাসার কাছাকাছি গাছপালা, নদী কিংবা খোলা মাঠ যদি থাকে তবে সেখানে যান। এসব কিছুই যদি না থাকে তবু কিছু সময়ের জন্য বাইরে থেকে ঘুরে আসুন। প্রতিনিয়ত ফোনের দিকে না তাকিয়ে প্রকৃতির দিকে তাকান
# সারাক্ষণ ফোনে বুঁদ না থেকে মেডিটেশনের চেষ্টা করুন। এতে মন প্রশান্ত হবে, সেই সঙ্গে দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে। ‘ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম’ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে
# ব্যায়াম শুরু করে দিতে পারেন। এতে শরীরের জড়তা যেমন দূর হবে, তেমনি মনও ভালো থাকবে
# পুরোটা সময় ফোনের পেছনে ব্যয় না করে বরং আপনার পছন্দের কোনো গান শুনুন। গান শুনতে ভালো না লাগলে নিজে একটু গেয়ে নিতে পারেন
# হাতের কাছে মজার কোনো কৌতুকের বই রাখুন। দুই-একটি কৌতুক পড়ে ফেলুন। মন ভালো হয়ে যাবে। ফোনের কথা মন থেকে দূরে রইবে।নিয়মগুলো মেনে চললে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা যাবে ফ্যান্টম ভাইব্রেশন সিনড্রোম।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০