নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্রমাগত দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ভেতর বাড়ছে হতাশা। মানসিক সমস্যায় ভুগে অনেকে বেছে নিচ্ছেন আত্মহননের পথ। দেশের প্রতিটি উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানেও একই পরিস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১০ জনের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
রাবি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তথ্যমতে, গত ছয় বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই হাজার ২৩১ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, যা মোট শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ১০ শতাংশ। চিকিৎসাসেবা নেয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন ৯৮০ ছাত্র, এক হাজার ১৪ ছাত্রী, ১১৪ শিক্ষক ও ১১৮ কর্মকর্তা।
এছাড়া গত ৯ মাসে ৪০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন ১৯৪ ছাত্র, ১৮২ ছাত্রী, ১৭ শিক্ষক ও সাত কর্মকর্তা-কর্মচারী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি, নিদ্রাহীনতা ও কর্মজীবন নিয়ে হতাশার কারণে মানসিক সমস্যা বাড়ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। যথাযথ কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা না করলে ঝুঁকি আরও বাড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় দুই বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আট শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে গত ১০ মাসে তিনজন এবং গত বছর পাঁচজন শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মনোচিকিৎসক ড. তানজির আহমেদ তুষার বলেন, ‘নানা কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অনলাইন আসক্তি অন্যতম। অকারণে সময় নষ্ট এবং প্রাপ্তির খাতায় শূন্যতা থেকে হতাশার সৃষ্টি হয়। এছাড়া নিদ্রাহীনতা, অবসাদ, প্যানিক ডিসওর্ডার, সম্পর্কের টানাপড়েন ও মানসিক চাপে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এছাড়া করোনা-পরবর্তী সময়ে নিজেকে মানিয়ে নিতেও পারছেন না অনেকে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও হল কর্তৃপক্ষকেও উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।