আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের মারিউপোলের সবশেষ শক্ত অবস্থান আজভস্টল স্টিল কারখানায় অভিযানের পরিকল্পনা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইঘুকে এই নির্দেশ দেন তিনি। রুশ সেনাবাহিনীকে অভিযানের বদলে কারখানাটি অবরুদ্ধ করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
কয়েক দিন আগে সোইঘু প্রেসিডেন্টকে জানান, আজভস্টল কারখানায় দুই হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় যোদ্ধা লুকিয়ে রয়েছে। বিশালাকার এই কারখানায় মাটির নিচে আশ্রয় নেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে।
ক্রেমলিন থেকে টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বৈঠকে সোইগুকে উদ্দেশ্য করে পুতিন বলেন, ‘শিল্প এলাকায় অভিযানের পরিকল্পনা অপ্রয়োজনীয় বলে বিবেচনা করছি। এটি বাতিল করতে নির্দেশ দিচ্ছি।’
পুতিন জানান, আজভস্টল কারখানায় অভিযান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রুশ সেনাদের জীবন রক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘ভূগর্ভস্থ এসব সমাধিক্ষেত্রগুলোতে ঢুকে পড়ার কোনও দরকার নেই। শিল্প এলাকাটি ঘিরে ফেলুন, যাতে একটা মাছিও বের হতে না পারে।’
এর আগে, চলমান যুদ্ধের মাঝে দু’দিন আগে ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম দিয়েছিল মস্কো। আত্মসমর্পণ করা যোদ্ধাদের জীবন রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দেয় রাশিয়া। আত্মসমর্পণ করলে রাশিয়া তাদের সম্মান দেখাবে এবং আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেবে। সেই আহ্বানে সাড়া না মেলায় বুধবার ফের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় মারিউপোলে অবস্থানরত সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেয় ইউক্রেন।
এরপরই ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের অবশিষ্ট ঘাঁটি আজভস্টল ইস্পাত কারখানা দখলের ঘোষণা দেন রাশিয়ার চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রধান ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ সহযোগী রমজান কাদিরভ। তিনি বলেছেন, ‘দুপুরের খাবারের আগে বা দুপুরের খাবারের পরে, আজভস্টল সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ান ফেডারেশনের বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’
এদিকে, বুধবার ইউক্রেনের জ্যেষ্ঠ আলোচক ও প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সহযোগী মিখাইলো পোডোলিয়াক মারিউপোল শহরের বাসিন্দাদের রক্ষায় বিশেষ পর্বের আলোচনা শুরু করতে রাশিয়ার কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।
মারিউপোলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ফলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা পূর্বের ডনবাস অঞ্চল হয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে রাশিয়ার করিডর স্থাপন সহজ হবে। এর ফলে নিজেদের বেশিরভাগ উপকূলীয় এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারাবে ইউক্রেন।